শিক্ষকের নির্দয় বেত্রাঘাত ও নির্যাতন, কলাপাড়ায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র হাসপাতালে

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): সহপাঠীর খাতা ফেরত না দেয়ায় কয়েকশ’ ছাত্র-ছাত্রীর সামনে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. রুমানকে বেত দিয়ে নির্দয় ভাবে পিটিয়ে ও মাথায় কিলঘুষি মেরে গুরুতর আহত করেছেন শিক্ষক এ এইচ এম এরফান । গুরুতর আহত রুমানকে শুক্রবার বিকেলে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কলাপাড়ার এম ইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

আহত স্কুল ছাত্র জানায়, বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করেই এলোপাথাড়ি বেত্রাঘাত করতে থাকেন এরফান স্যার। এ সময় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিল। বেত্রাঘাত করতে করতে তিনটি বেত ভেঙে ফেলার পর কিল-ঘুষি মারতে থাকেন ওই শিক্ষক। এতে রুমান মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পায়। কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।

রুমান তার সহাপাঠী রাকিবুলের একটি খাতা নেয়। কিন্তু খাতাটি সে সময়মতো ফেরত না দেয়ায় রাকিবুল এ নিয়ে শিক্ষকের কাছে নালিশ করে। এতে রুমানের ওপর নির্যাতন চালান এরফান।

রুমানের মা নয়ন বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রুমান অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে ভাত খেতে বসে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তিনবার বমি করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ছেলেকে মারধরের খবর স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা জানলে কেউ তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেনি। তিনি ছেলেকে মারধরের বিচার চেয়েছেন।

কলাপাড়া হাসপাতালে জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারী মো কবির জানান, ওই ছাত্রের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাছাড়া তার মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে বলে তাদের জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি হাওলাদার জানান, তিনি শুক্রবার সকালে এ মারধরের কথা শুনেছেন। স্কুলের অন্য শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক এ এইচ এম এরফান এর সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. জাকির খান জানান, আহত ছাত্রের মা তার কাছে এ মারধরের কথা বলেছেন। কিন্তু ওই শিক্ষকের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। তবে আগামীকাল (শনিবার) স্কুলে গিয়ে শিক্ষক-ছাত্রদের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।