স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতুর শতবর্ষ অতিক্রম উপলক্ষে রেল কর্তৃপক্ষ পাকশী সড়ক ও জনপথের সম্মেলনকক্ষে রোববার দুপুরে একটি সেমিনারের আয়োজন করেন। এতে জাপান, কোরিয়া, হাঙ্গেরি, স্পেন, ভারত, বাংলাদেশসহ জাইকা ও আইএবিএসই’র ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন।
প্রাকৃতিক ও নির্মাণজনিত কোনো সমস্যা ছাড়াই হার্ডিঞ্জ সেতু শতবর্ষ অতিক্রম করায় আন্তর্জাতিক সেতু বিশেষজ্ঞরা এটিকে বিশ্বের মডেল সেতু হিসেবে অভিহিত করেন। এ সেতু আগামী ২৫ বছরেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এমন পূর্বাভাসও করেন তারা।
দলনেতা ও সেমিনারের প্রধান অতিথি আন্তর্জাতিক সেতু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, সামাজিক বা প্রাকৃতিক বিরূপ প্রভাব না থাকলে আগামী ২৫ বছরেও হার্ডিঞ্জ সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না। সেতুটিকে আরও বেশিদিন নিরাপদে যাতে ব্যবহার করা যায় সেজন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করার লক্ষ্য নিয়েই এই গবেষক দলের পরিদর্শন বলে তিনি জানান। সেমিনার শুরুতেই সভাপতি ও রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন হার্ডিঞ্জ সেতুর নির্মাণ সংক্রান্ত ইতিহাস উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে বক্তব্য দেন সেতু বিশেষজ্ঞ ও ভারতীয় প্রকৌশলী অমিতাভ ঘোষাল, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান তৌফিকুল আনোয়ার, আইএবিএসই এর সদস্য ড. আজাদুর রহমান, বুয়েটের শিক্ষক ডা. হাসিব মোহাম্মদ হাসান, ড. সাইফুর আলী, ড. আব্দুর রউফ, জাইকার সদস্য কে নোগামি, ক্যারলী হিরোস, টি ইসিকুতা, এডিজিআই কাজী রফিকুল আলম, এডিজি অপারেশন হাবিবুর রহমান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম খায়রুল আলম, টঙ্গি-ভৈরব ডাবল লাইন প্রকল্পের জিএম সাগর কৃঞ্চ চক্রবর্তি, পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী মাহাবুবুল আলম বকশী, টঙ্গী -ভৈরব ডাবল লাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার ভৌমিক, পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন প্রমুখ।
হার্ডিঞ্জ সেতুর পাশে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হলে সেতুর কোনো ক্ষতি হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোনো প্রভাব হার্ডিঞ্জ সেতুকে স্পর্শ করবে না। কারণ রাশিয়ান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। একই সাথে তিনি বলেন, আগামী ২৫ বছর নিরাপদে হার্ডিঞ্জ সেতু ব্যবহারের সাথে সাথে পাশে আরো একটি নতুন রেল সেতু নির্মাণ করা হবে। তিনি সাংবাকিদদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাকশীর ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠে শ্রীঘ্রই শিক্ষক নিয়োগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ হাতে নেওয়া হবে। সেমিনার শেষে বিকেলে বিশেষজ্ঞ দল প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী ১ দশমিক ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ হার্ডিঞ্জ সেতু পর্যবেক্ষণ করেন।