এম. মিরাজ হোসাইন, বরিশাল: জোয়ারের পানি বৃদ্ধি আর অতিবর্ষণে বরিশালের ৫২ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমির পাকা আউশ ধান এক সপ্তাহ ধরে এক থেকে দুই ফুট পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। পানির নিচে ধানের গোছা এলোমেলো থাকায় কৃষকেরা পাকা ধান কাটতে পারছেন না। ফলে ধানে পচন ধরতে শুরু করেছে। এ কারণে কৃষকের আউশ ধান ঘরে তোলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি আউশ মৌসুমের শুরুতে কৃষকদের খরার কবলে পড়তে হয়েছে। পরবর্তীতে বীজতলা তৈরির পর পরই কৃত্রিম বন্যায় অধিকাংশ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জমি আবাদযোগ্য করার পরেও আউশ চাষে বিলম্ব হয়। এতে জেলার ১০টি উপজেলায় আউশ চাষ ২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৭০ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রা থেকে নেমে আসে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। কৃষকদের জমি আবাদের সকল প্রস্তুতি থাকা পরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে আবাদ কম হয়েছে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা সদরের আউশ চাষি নুরুল ইসলাম মুন্সি বলেন, বিপর্যয়ের অনেক ধকল সয়ে পাকা ধান ঘরে তোলায় আশায় ছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ ৬/৭ দিন ধরে পাকা আউশ ধান পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ইতোমধ্যে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কীর্ত্তিপাশা এলাকার চাষি হেমায়েত হাওলাদার বলেন, এনজিওসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আউশ আবাদ করেছিলাম। গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে পাকা ও আধাপাকা আউশ ধান পানির নিচে তলিয়ে থাকায় আমিসহ অন্যান্য চাষিদের এখন পথে বসার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল আজিজ ফরাজী জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার আউশ চাষিদের সাথে কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।