প্রতিনিধি, খুলনা: দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কোচিং সেন্টারে ডেকে নিয়ে প্রেম নিবেদন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে নগরীর সেন্ট জেভিয়ার্স হাইস্কুলের লাইব্রেরিয়ানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। খুলনা মডেল থানায় বুধবার
রাতে লাইব্রেরিয়ান উত্তম কুমার বিশ্বাস ওরফে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলাটি নথিভুক্ত হয়। এদিকে অভিভাবকদের দাবির মুখে স্কুল পরিচালনা পর্যদ আবুল কালাম আজাদকে বরখাস্ত করেছে। তাকে কেন চাকরিচ্যুত করা হবে না তা জানতে চেয়ে নোটিশ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আজাদ পলাতক।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, স্কুলের অনেক ছাত্রীই লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম আজাদের নিরালার কোচিং সেন্টারে কোচিং করত। ওই কোচিং সেন্টারে কোচিং না করলে তাদের পরীক্ষায় ভালো নম্বর দেয়া হয় না। ৫ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দুপুরে আজাদ ওই ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে কোচিংয়ে আসতে বলেন। মেয়েটি গিয়ে দেখে অন্য কোনো ছাত্রছাত্রী নেই সেখানে। এ সময় ছাত্রীটি শিক্ষকের কক্ষে গেলে আবুল কালম আজাদ তাকে নানা অশালীন প্রস্তাব দেয়। একপর্যায়ে তাকে যৌন হয়রানি করেন। ছাত্রীটি কাঁদতে কাঁদতে কোচিং সেন্টার থেকে বাসায় গিয়ে ঘটনাটি মাকে জানায়।
ওই দিনই মেয়েটির বাবা সোনাডাঙ্গা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এ সময় থানায় ছাত্রীটি এবং তার মা উপস্থিত ছিলেন। থানার এসআই মিলন ছাত্রীটির জবানবন্দি রের্কড করেন।
সেন্ট জেভিয়ার্স হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সোনাডাঙ্গা থানা থেকে তার কাছে প্রথম ফোনে জানতে চাওয়া হয় শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ কোথায় আছেন। তখন খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি পলাতক এবং তার মোবাইল ফোনও বন্ধ।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, ওই শিক্ষকের সব শিক্ষা সনদে নিজের নাম উত্তম কুমার বিশ্বাস ও পিতা নিমাই কুমার বিশ্বাস লেখা রয়েছে। তবে স্কুলের সবার কাছে তিনি আবুল কালাম আজাদ নামেই পরিচিত।
ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা জানাজানি হলে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে তিনি বুধবার বিকালে মানেজিং কমিটির বৈঠক আহ্বান করেন। কমিটি আজাদকে বরখাস্ত করেছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ জানান, ঘটনার পর থেকে সেই শিক্ষক পলাতক। কোচিং সেন্টারও বন্ধ।
খুলনা থানার কর্তব্যরত উপপরিদর্শক (এসআই) শফিক আহমেদ জানান, গত বুধবার রাতে আবুল কালাম আজাদের নামে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।