মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): কলাপাড়ার তিন ভুয়া ডাক্তারের একজন ডা. মোহাম্মাদ শরিফ জালালকে গ্রেফতার করে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ সকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া শহরের পপুলার ডায়াগনস্টিক ল্যাবে অভিযান চালিয়ে তার কোনো চিকিৎসা সনদ ও রেজিস্ট্রেশন না পেয়ে কলাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপক কুমার রায়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ রায় দেন।
কলাপাড়া থানা সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মাদ শরিফ জালাল নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে মেডিসিন, প্যারালাইসিস, বাতজ্বর ও ব্যথা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও চর্ম-যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চিকিৎসা ভিজিট নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। ওই ব্যক্তি তার ব্যবস্থাপত্রে এমবিবিএস, পি.জি.টি, এফসিপিএস (মেডিসিন) পার্ট-২ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা উল্লেখ করেছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত এই অভিযান পরিচালনা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপক কুমার রায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ভুয়া পদবি ও চিকিৎসক সনদ না থাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ২৯ (২) ধারা মোতাবেক ওই ব্যক্তিকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুজ্জামান ও উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. ফেরদৌস হোসেনসহ অন্যরা।
এর আগে দেশের খবরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কলাপাড়ার তিন কথিত চিকিৎসকের প্রতারণা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়।
কলাপাড়ার বিভিন্ন লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ফার্মেসিতে বসে ওই তিনজন এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী দেখছিলো। এ প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বিষয়টি বেরিয়ে আসলে ও স্থানীয় সাধারণ মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩০ আগস্ট কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. লোকমান হাকিম ওই তিন ডাক্তারকে নোটিশ করেন।
পাশের শিরোনামে ক্লিক করে দেশের খবর-এ প্রকাশিত রিপোর্টটি পড়ুন: ডাক্তার না হয়েও কোটি টাকার চিকিৎসাবাণিজ্য, কলাপাড়ায় সার্টিফিকেট চেয়ে ৩ জনকে নোটিশ
নোটিশে তাদের চিকিৎসা সনদ ও বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দিলেও তিনজনের কেউই জমা না দেয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এদিকে অভিযানের খবর পেয়েই ক্লিনিক পাড়া থেকে পালিয়েছে অপর ভুয়া ডাক্তার মনির হোসেন। অন্য ভুয়া ডাক্তার তৌফিকা জেরিন হক কলাপাড়া ছেড়ে এখন খুলনায় বসে আবার রোগী দেখা শুরু করেছে বলে জানা যায়। স্থানীয়দের দাবি ভুয়া ডাক্তার ধরা হলো এবার কলাপাড়ার লাইসেন্ বিহীন ক্লিনিক ও ক্লিনিকের ভুয়া ল্যাব টেকনিশয়ানদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করলে সাধারণ মানুষ দূর্ভোগ ও অপচিকিৎসা থেকে মুক্তি পাবে।