প্রতিনিধি, খুলনা: দখলবাজ ও টেন্ডারবাজদের দখলে চলে গেছে দেশ। সংবিধানের পাতায় গণতন্ত্র থাকলেও দেশে নেই। সুশাসন নেই। সবার কাছে বন্দুক-পিস্তল। গরুর হাটে গোলাগুলি হয়, প্রতিবাদ করার কেউ নেই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ সোমবার নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে তিনি আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানান।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, দেশের মানুষের মূল্যবোধ নষ্ট হয়েছে। শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতিত হচ্ছে। বিচারকার্য বিলম্ব হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। এসব অপরাধীরা শাসক দলের সাথে জড়িত।
তিনি বলেন, আমি দলীয়করণে বিশ্বাস করি না, আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। আমি বিচারকদের কাজে হস্তক্ষেপ করিনি। বেসিক ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, সে টাকা উদ্ধার হয়নি। এখনো হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতাদের গ্রেফতার করা হয়নি। রাষ্ট্রীয় অর্থ পাচার হলে কেউ তার প্রতিবাদ করলে অর্থমন্ত্রী রসিকতা করেন।
তিনি আরো বলেন, জাপাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য গ্রামাঞ্চলে আবার ছুটেছি। মানুষের মুখে আবার হাসি ফোটাতে তিনি জাপাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান।
সরকারের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ক্ষমতায় থেকে তারা অন্ধ হয়ে গেছেন। তারা অন্যায় দেখতে পায় না। তিনি আরেকবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য খুলনাবাসীর সমর্থন চান।
তিনি জেলা শাখার সভাপতি পদে একমাত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুকে পুনরায় মনোনীত করেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে খুলনা জেলা শাখার আহ্বায়ক ও এরশাদের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায় সভাপতিত্ব করেন।
জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় পার্টি আত্মপ্রকাশ করে, এরশাদ তার সফল বাস্তবায়ন করেন।
সম্মেলনে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ৮২ সালে ক্ষমতা গ্রহণের দু’ বছর পর হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ নির্বাচন দিতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ৮৬ সালে জাতীয় নির্বাচন হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সদস্য সাহিদুর রহমান, তাজ রহমান, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবুল হোসেন।
বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় যগ্ম মহাসচিব জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম মধু, শ্রমিক পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন জাহাঙ্গীর, সাবেক সংসদ সদস্য একেএম মোক্তার হোসেন, জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান, মহানগরী শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য জহুর আলী মোড়ল, মৎসজীবী পার্টির সভাপতি সোমনাথ দে, ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ জমাদ্দারসহ অন্যরা।