কুলাউড়ায় ১১টি কেন্দ্রে টিকা না পেয়ে ফিরে গেছে শিশুসহ অভিভাবকরা

আজিজুল ইসলাম, মৌলভীবাজার: কুলাউড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১১টি টিকাদান কেন্দ্রে রোববার ব্যাহত হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতায় এসব কেন্দ্র থেকে ০-১৮ মাস বয়সের শিশুরা টিকা না নিয়ে ফিরে গেছে।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা ডা: মহিউদ্দিন আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ইপিআই) আপ্তাব উদ্দিনের গাফলতি ও ব্যবস্থাপনার কারণে টিকা গ্রহণ থেকে শিশুরা বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

জানা যায়, নিয়মিত টিকাদানের কর্মসূচির অংশ হিসাবে গতকাল রোববার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ইপিআই কেন্দ্রে ০-১৮ মাস বয়সী শিশুদেরকে নিউমোনিয়া, হুপিংকাশি, হামরুবেলা ও হাম, যক্ষ্মা, পোলিও, ধনুষ্ট্রংকার রোগের প্রতিষেধক টিকাদানের নির্ধারিত তারিখ ছিল। স্ব স্ব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সহকারীরা তাদের কেন্দ্রের অভিভাবকদেরকে কেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহণের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য প্রদান করেন। সেই মোতাবেক বিভিন্ন ইউনিয়নের ১১টি কেন্দ্রে সকাল থেকেই অভিভাবকরা শিশুকে টিকা দেয়ার জন্য আসেন। কিন্তু কেন্দ্রে এসে দেখেন স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স থেকে টিকার ভ্যাকসিন পৌঁছায়নি। তখন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে অবহিত করলে ইপিআই টেকনিশিয়ান আপ্তাব উদ্দিন ভ্যাকশিন কেন্দ্রে পৌঁছাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। দুপুর ১ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে ভ্যাকসিন না পেয়ে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা নিরাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে যান।

স্বাস্থ্য সহকারী কাজল চন্দ্র পাল, সৈয়দা আলেয়া, আফিয়া বেগম-১, আফিয়া বেগম-২, হাসি রানী দে, জাকারিয়া, কবরী দে, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর রব, পারভীন বেগম, কোকিল মালাকার, শিউলি বেগম, জামান আরা বেগম, সৈয়দ আজাদ হোসেন ও রুমা রানী সরকার অভিযোগ  করেন, গত ৩ দিন আগে ইপিআই টেকনিশিয়ান আপ্তাব উদ্দিন স্ব স্ব কেন্দ্রে ভ্যাকসিন পাঠাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এরই প্রেক্ষিতে আমরা প্রায় ৪০ জন স্বাস্থ্য সহকারী বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করি। তখন তিনি প্রতিটি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন পৌঁছানোর জন্য ইপিআই টেকনিয়ানকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু আমরা গতকাল রোববার সারাদিন অপেক্ষা করেও ভ্যাকসিন পাইনি।

অভিযুক্ত ইপিআই টেকনিশিয়ান আপ্তাব উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মহি উদ্দিন আহমদের  সাথে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এ ব্যাপারে তার কোন বক্তব্য জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা: সত্যকাম চক্রবর্তী জানান, কী কারণে  ইপিআই কেন্দ্রে টিকা পৌঁছানো হয়নি তা আমি খবর নিয়ে দেখছি। এ বিষয়ে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হবে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.