প্রতিনিধি, খুলনা: ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ বিপ্লব গোস্বামীর আদালতে রবিন্দ্র নাথ দত্ত বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন আইনে দায়েরকৃত এ মামলায় জনপ্রতিনিধিসহ ছয়জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে কোরবানির পশুর হাট বসানো ও পশু বেচাকেনা থেকে আদায় করা ২০ লাখ টাকার রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, জলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মোল্লা অস্থায়ী গোহাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. বিল্লাল হোসেন খান ওই আবেদনে মতামত সাপেক্ষে সুপারিশ প্রদান করেন। জেলা প্রশাসক শর্ত সাপেক্ষে অস্থায়ী গরুর হাট বসানোর অনুমতি দেন। শর্ত অনুযায়ী, অন্যকোনো হাট বা বাজারের আওতাভুক্ত এলাকা (কমান্ড এরিয়া), মহাসড়ক ও স্কুল মাঠসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানো যাবে না।
কিন্তু আসামিরা স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ ও জেলা প্রশাসকের আদেশ অমান্য করে মহাসড়কের পাশে স্কুল মাঠে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসান। জলমা ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গায় প্রগতি স্কুল মাঠে ২০ সেপ্টেম্বর হতে ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত পশুর হাট বসিয়ে স্কুলের বারান্দায় হাসিল ঘর স্থাপন করে টাকা আদায় করা হয়। সেই হাট থেকে আদায়কৃত ২০ লাখ টাকা উপজেলা রাজস্ব তহবিলে বা সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা না করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. বিল্লাল হোসেন খান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মোল্লা টাকা আত্মসাৎ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এতে সরকার বড় ধরনের একটা রাজস্ব থেকে বঞ্ছিত হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার আরজিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তারিখের সরকারি হাট-বাজারসমূহের ইজারাপদ্ধতি এবং আয়বন্টন সম্পর্কিত নীতিমালার ১০.২ উপধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, যদি ঈদ বা অন্য কোনো বিশেষ উপলক্ষে অস্থায়ী হাট-বাজার বসানোর প্রয়োজন পড়ে, তবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ জেলা প্রশাসকের পূর্ব অনুমতি গ্রহণ করে প্রচলিত নীতিমালার বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ইজারা প্রদান করবেন। এতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ইজারালব্ধ অর্থের ২০ ভাগ ভুমি রাজস্ব খাতে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। অবশিষ্ট ৮০ ভাগ অর্থ সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের নিজস্ব আয় হিসাবে গণ্য হবে এবং উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিলে জমা করার নির্দেশনা রয়েছে।
জেলা ও দায়রা জজ বিপ্লব গোস্বামী মামলাটি আমলে নিয়েছেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মনোরঞ্জন বিশ্বাস এ তথ্য জানান।