রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রতিনিধি, রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) যৌন ও চর্ম রোগের চিকিৎসক এবিএম নাফিস এন্তেখাবের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন এক রোগী।

আজ রোববার দুপুরে এক নারী রোগী বাম হাতের কনুইয়ের চিকিৎসার জন্যে বহির্বিভাগে গেলে চিকিৎসক রোগীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করেন।

পরে ওই রোগী হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছেও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন তিনি।

নওগাঁ জেলার মান্দা থানার ভুক্তভোগী ১৮ বছর বয়সী ওই রোগী অভিযোগ করেন, বাম হাতের কনুইয়ের চিকিৎসার জন্য আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের চর্মরোগের চিকিৎসক ডা. নাফিসের কাছে যান। চিকিৎসক তার পাশে রাখা টুলে তাকে বসিয়ে হাত দেখেন। এরপর মুখের নেকাব খুলতে বলেন।

রোগী ওই চিকিসককে বলেন, ‘আমার সমস্যা হাতে আপনি মুখ দেখবেন কেন? চিকিৎসক বলেন, দরকার আছে। পেটে কী ঘা হয়েছে? এই বলে পেটের কাপড় তুলে পেট দেখেন এবং বুকে হাত দিয়ে ব্যথা করছে কি না তা জানতে চান।’

চিকিৎসকের এমন আচরণে তিনি (রোগী) কাঁদতে থাকেন। এরপরও চিকিৎসক তার আরো অশালীন আচরণ করেন। কিছুক্ষণ পরে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাইরে বের হয়ে আসেন এবং ঘটনাটি তার স্বামীকে জানান। পরে ভুক্তভোগী রোগী ও তার স্বামী ঘটনাটি হাসপাতাল পুলিশ বক্স ইনচার্জ এসআই মোস্তাফিজুর রহমানকে মৌখিকভাবে জানান।

তবে রোগীর করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক এবিএম নাফিস এন্তেখাব। গণমাধ্যমকর্মীরা তার কাছে গেলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে চেম্বার থেকে দ্রুত বেরিয়ে যান। এমনকি চেম্বারের বাইরে গিয়েও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

ওই চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আনোয়ার নামের এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, তার চেম্বাররে কোনো মেয়ে রোগী ঢুকলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে চিকিৎসা করেন। অথচ পুরুষদের মাত্র এক দেড় মিনিটে চিকিৎসা সেরে ফেলেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন, কোনো মেয়ে রোগী ঢুকলে ওই চিকিৎসক দরজায় এসে রোগীদের ধমক দিয়ে দূরে সরে যেতে বলেন।

তবে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত চিকিৎসক এবিএম নাফিস এন্তেখাব কোনো রোগীর সঙ্গে অশালীন আচরণের কথা অস্বীকার করে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

রামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সকালে ওই রোগী তার স্বামীকে নিয়ে পুলিশ বক্সে গিয়ে চিকিৎসক নাফিস এন্তেখাব এর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মৌখিক অভিযোগ করেন। এসময় তিনি তাকে বিষয়টি রাজপাড়া থানায় লিখিতভাবে জানানোর পরামর্শ দেন।

রামেক হাসপাতলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রফেসর ডা. একেএম মনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। অভিযোগের ব্যাপারে তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.