বিকাশে প্রতারণার জাল, নিঃস্ব হলেন খুলনার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

প্রতিনিধি, খুলনা: খুলনায় প্রতারণার মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের এক এজেন্টের কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত শনিবার রাতে বিকাশের স্থানীয় বিক্রয় প্রতিনিধি তার নম্বর থেকে ফোন করে জিল্লুর রহমান নামের ওই এজেন্টের কাছ থেকে মোবাইলে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নেন। কিন্তু সকালে বিক্রয় প্রতিনিধি জানান তিনি কাউকে ফোন দেননি।

এর আগে গত সপ্তাহে বিকাশের কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন করে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ৫৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ভুক্তভোগীরা বিকাশের আঞ্চলিক কার্যালয় ও ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি। বিকাশ গ্রাহক ও এজেন্টদের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য কীভাবে বাইরে যাচ্ছে তারও কোনো উত্তর দিচ্ছে না বিকাশ কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী জিল্লুর রহমানের মহানগরী খুলনার ১৩৯ শেরে বাংলা রোডের ময়লাপোতা মোড়ের ব্যবসায়ী। তিনি জানান, শনিবার রাতে বিকাশের বিক্রয় প্রতিনিধি (বিএসআর) মো. হায়দার আলীর নম্বর থেকে তাকে ফোন করা হয়। তাকে জানানো হয়, ১ লাখ ৮০ হাজার এজেন্টের মধ্যে ৫০ হাজার এজেন্ট রেখে বাকিদের বাদ দেয়া হবে। এজন্য মোবাইলের টাকাগুলো তার নম্বরে পাঠিয়ে দিতে বলেন তিনি। তিনি পাঁচটি নম্বরও দেন।

জিল্লুর রহমান জানান, বিএসআরের সাথে প্রতিদিনই কয়েকবার কথা হয়। এজন্য তার কথা বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে দেন। সকালে বিএসআরকে ফোন করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। যে নম্বরগুলোতে টাকা পাঠানো হয়েছে ওইগুলো বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনার পর খুলনার বিকাশ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বিকাশ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করলে তারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

এর আগে দুই সপ্তাহ আগে সাকিব নামের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে বিকাশের স্কিল কম্পিটিশনে অংশ নেয়ার অফার দেয়। পরবর্তীতে বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে নাম অন্তর্ভুক্ত করে এসএমএস পাঠানোর অনুরোধ করা হয়। স্থানীয় এক বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে ওই নম্বরে এসএমএস পাঠানোর পর দেখা যায়, এজেন্টের মোবাইল হিসাব থেকে ৫৪ হাজার টাকা কেটে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগী বিকাশের আঞ্চলিক কার্যালয়, র‌্যাব-৬, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও ব্র্যাক ব্যাংকের শরণাপন্ন হয়েও কোনো ফল পাননি।

এ ব্যাপারে বিকাশের বিক্রয় প্রতিনিধি হায়দার আলী জানান, তার নম্বরটি হ্যাক করা হয়ে থাকতে পারে।

বিকাশের আঞ্চলিক বিক্রয় কর্মকর্তা এস এম খালিদ হোসেন বলেন, কীভাবে প্রতারণা হচ্ছে এটি আমি বলতে পারব না। গ্রাহক ও এজেন্টদের তথ্য কীভাবে বাইরে যাচ্ছে–এর কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

মোবাইল রিচার্জ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন খুলনার সভাপতি মো. সুজন আহমেদ বলেন, একের পর এক প্রতারণা হচ্ছে কিন্তু বিকাশ কর্তৃপক্ষ একটি ঘটনারও সুরাহা করতে পারেনি। বিকাশের কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে এজেন্টদের তথ্য বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিকাশের প্রতারণা বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.