রাজশাহীতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০

স্মরণ সরকার, রাজশাহী: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটার পর বিদ্যালয়সহ ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্থানীয় পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন তার ভাতিজাকে নিয়োগ দিতেই নিয়োগ প্রক্রিয়া প- করতে আগে থেকেই চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। তিনি তার লোকদের পাঠিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষককে মারধর ও বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তেবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বোর্ড বসার কথা ছিল। এর আগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) আফসার আলী ও সহকারী শিক্ষক (কৃষি) মোজাম্মেল হক আবেদন করেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এমন শর্ত থাকলেও মোজাম্মেল হকের সে অভিজ্ঞতা না থাকায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আফসার আলীকে ওই পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল বিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড বসার কথা থাকায় সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ৫-৬ টি মোটরসাইকেলে করে ১০-১২ জন বহিরাগত বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষক আফসার আলীকে মারপিট শুরু করে। এছাড়া তারা বিদ্যালয়ে হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় অন্তত ১০ জন আহত হন। বহিরাগতদের মধ্যে আহতরা হলেন মেয়র তোফাজ্জল হোসেনের ভাগ্নে রবিন (৩৫), সূখানীদিঘীর মাসুদ রানা (৪০), ধরমপুরের এনামূল হক (৩৬) ও শেখপাড়ারার মোজাম্মেল হক (৫০) এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক আফসার আলী (৪২) ও এলাকাবাসী ইসমাইল হোসেন (৩৮)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে মাত্র ২ জন আবেদন করলে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হওয়ায় আফসার আলীকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন বেশ কয়েকদিন থেকে মোজাম্মেল হককে নিয়োগের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। ওই পদে মোজাম্মেলকে নিয়োগ দেওয়া হলে তার পদটি শূন্য হবে এবং ওই পদে মেয়র তোফাজ্জলের ভাতিজাকে নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ মোজাম্মেল হক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন না হওয়ার কারণে আফসারকেই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এটা মেনে নিতে না পেরে মেয়র তোফাজ্জল তার বাহিনী পাঠিয়ে নিয়োগ বোর্ড ভ-ুল করার চেষ্টা চালান। এ ব্যাপারে পৌর মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পরিমল কুমার চক্রবর্তী জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আপাতত ওই এলাকা শান্ত আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.