মন্ত্রীর আশ্বাসে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অচলবস্থা নিরসন

আমিনা বিলকিস ময়না, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের ১৫ দিনের অচলবস্থা নিরসন হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রীর দুই দফা আশ্বাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শনিবার দুপুরে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে। তবে শিক্ষার্থীরা জানায়, ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল চালু না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে লাগাতর আন্দোলন করা হবে।

DSC02860
মন্ত্রীর আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট স্থগিত করেছে

শনিবার আন্দোলনের ১৫তম দিনে সকাল থেকেই মিছিল-স্লোাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে চলে এসে অবস্থান গ্রহণ করে। তারা সকাল সাড়ে ৯টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়। টানা রৌদ্রে শিক্ষার্থীরা মুর্হুমুর্হু স্লোগান দিতে থাকে। পরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশে রাখেন আন্দোলনের সমন্বয়ক ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন, গোলাম মোক্তাদির, অরিন আক্তার, উদয় সঙ্কর, সালমান আমীর, সারা লিপিকা, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ৪র্থ বর্ষের আসলাম হোসেন, আহসান হাবীব, রোকনুজ্জামান প্রমুখ।

সকাল ১০টায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খান সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে দাবিগুলো শোনেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন তুলে নেওয়ার আহবান জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ। তবে এ সময় কলেজের কোন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন না।

শাহাজান খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোন আন্দোলন বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। তোমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু আমাদের সময় দিতে হবে। এই বিষয়গুলো একদিনে চালু করা সম্ভব নয়। এর সাথে অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সময় দাও, আমরা দ্রুত তোমাদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খান পুনরায় মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানান। এ সময় বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট আরো একটি স্মারক লিপি তুলে দেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন জানান, প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক ও নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খানের আশ্বাসে আমরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রত্যাহার করছি। তবে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল চালুর দাবিতে আমরা অনড় আছি। তিনি আরো বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গরূপে চালু না হলে আমরা পুনরায় আন্দোলনে যাবো। তিনি আরো বলেন, ৮ নভেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ দুটি অফিস আদেশ জারি করেছে। সেখানে মেডিসিন, সার্জারী, শিশু সার্জারী, গাইনী, শিশু, অর্থোপেডিক্স, চক্ষুসহ ৯টি বিভাগ খোলার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তার কার্যক্রম শুরু হয়নি। অপর একটি আদেশে ওটি বিভাগ চালুর কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে ১০০ বেড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো পুরো চালু হয়নি। এ জন্য দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে। তাদের দাবিগুলো নিয়ে আমরা ঢাকায় কথা বলছি।

৩১ অক্টোবর থেকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালুর দাবিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ বন্ধ ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.