আশাশুনির ভেঙে যাওয়া কোলা বেড়িবাঁধে রিং ও বাঁশের খাঁচা দিয়ে পানি আটকানো হয়েছে

আমিনা বিলকিস ময়না, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা গ্রামে ৪ নং পোল্ডারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বির্স্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার একদিন পর পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। সোমবার কয়েক হাজার মানুষের ৭ ঘন্টা বিরতিহীন পরিশ্রমে বাঁধে বস্তায় মাটি ভরে রিং বাঁধ ও বাঁশের খাঁচা পাইলিং ব্যবহার করে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটির পানি বন্ধ করা হয়।

ASSASUNI PHOTO-----(2)...09..05..2016-1
আশাশুনির ভেঙে যাওয়া কোলা বেড়িবাঁধে বস্তায় মাটি ভরে রিং বাঁধ ও পাইলিং দিয়ে পানি আটকানো হচ্ছে

শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল ও প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন, মেম্বার কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে ভোর ৬টা থেকে প্রায় দু’শত হাত ভাঙন এলাকায় ৩ শত বাঁশের খাঁচা বসিয়ে পাইলিং শুরু করা হয়। এরপর ৩ হাজার ৫ শ’ বস্তায় মাটি ভরে ভাঙনস্থানে রিং বাঁধ নির্মাণ করা হয়। দুপুর একটা পর্যন্ত দেড় হাজার শ্রমিক ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করা শত শত মানুষ বিরতিহীন শ্রম ব্যয় করে বাঁধ আটকানোর কাজ করেন। প্রায় দেড়টা পর্যন্ত জোয়ার হওয়ার পর ভাটা শুরু হয়। ততক্ষণ এলাকার মানুষ অধীর আগ্রহে বাঁধের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে কাজ চালিয়ে যান।

এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, সর্বস্তরের মানুষ এই কাজে অংশ নেন। কাজ চলাকালে এডিসি (সার্বিক) এহতেশামুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, ডিআরও আঃ ছাত্তার, এসডিও ফারুক হোসনে, এসও আবুল হোসেন, পিআইও সেলিম খান, আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মিলন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ, মেম্বার কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলি, আক্তার হোসেন, আঃ হান্নান, প্রাক্তন মেম্বারইদ্রিস আলি, স্বপন মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত শনিবার রাত্র সাড়ে ১১ টার দিকে খোলপেটুয়া নদীর প্রচণ্ড পানির স্রোতের চাপে বাঁধ ভেঙে পানি কোলা ও হিজলিয়া গ্রামে পানি ঢোকে। রবিবার সকালে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো হলেও  ১১.৪০ টার দিকে পুনরায় বাঁধ ভেঙে কোলার ৪৬৮ ও হিজলিয়া গ্রামের ২৫৮টি পরিবারের ঘরবাড়ি পানিতে নিমগ্ন হয়ে যায়। কোলা গ্রামের আদাড়ে, শামছুর রহমান গাজী, আমজেদ গাজী, হবি সরদার, জব্বার গাজী, ইয়াছিন গাজী, বাসুদেব সানা, হামিদ সরদার, আলা উদ্দিন, নূরুল গাজী, শংকর সানা, প্রভাত সানা, হরিমোহন সানাসহ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। ৪ শ’ মৎস্য ঘেরের ২ হাজার ৫০০ বিঘা জমির মাছ ভেসে যায়।

এছাড়া শ্রীউলা ইউনিয়নের কলিমাখালী, মাড়িয়ালা, হাজরাখালী ও লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের অংশ বিশেষ জলমগ্ন হয়। পাউবো কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে পানি আটকানোর কাজ স্থানীয়রা করেছেন। আমরা পরবর্তী সম্ভাব্য সকল কাজ চালিয়ে যাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.