জাহিবা হোসাইন, (মংলা) বাগেরহাট: উচ্চ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে মংলা-মোড়েলগঞ্জ সড়কের ঢালিরখন্ড ব্রিজ থেকে ঝিউধরা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক মূল ঠিকাদারকে বাদ দিয়ে অন্য একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দিয়ে নির্মাণ কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডি’র কিছু কর্মকর্তা নেপথ্যে থেকে কৌশলে শুরু থেকে নির্মাণকারী ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে পুনঃ টেন্ডারের মাধ্যমে আদালত প্রদত্ত নির্দেশ উপেক্ষা করে নতুন একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে দিয়ে সড়কের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আগামী তিন মাস সড়কের ওই অংশে নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখার জন্য হাই কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি এই কাজের টেন্ডারের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ২০১৩ সাল থেকে ২টি প্যাকেজে মংলা-মোড়েলগঞ্জ সড়কের ঢালিরখন্ড ব্রিজ থেকে ঝিউধরা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করে ফেনীর মেসার্স অগ্রণী কনক্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নানা জটিলতার মধ্যেও সড়কের ওই অংশের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করে। এরপর কোন কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ অগ্রণী কনক্ট্রাকশন-এর নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ বাতিল করে পুনঃ টেন্ডার আহ্বান করে।
এতে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশংকায় এলজিইডির কাছে নতুন করে সময় বর্ধিত করার আবেদন করে। কিন্তু এলজিইডি এ আবেদনে সাড়া না দিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পুন:টেন্ডার আহবান করে। এতে নতুন একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোহেল এন্টারপ্রাইজ এ কাজ পায়।
এরপর নতুন ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ গত ২৫ এপ্রিল সড়কের ওই অংশের নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ প্রদান করে।
এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অগ্রণী কনক্ট্রাকশনের মালিক এনামূল হক চৌধূরী সড়কের ওই অংশের নতুন ঠিকাদারের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ বন্ধের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রেক্ষিতে আদালত গত ১৩ এপ্রিল এলজিইডি’র ঢাকার প্রধান প্রকৌশলী, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী ও মংলার সহকারী প্রকৌশলীসহ এলজিইডি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আগামি তিন মাস পর্যন্ত সড়কের ওই অংশে নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখার আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের ওই আদেশকে উপেক্ষা করে এখন পর্যন্ত সড়কের ওই অংশে নতুন ঠিকাদার নির্বিঘেœ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেনের সাথে কয়েক দফা ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে এলজিইডি’র মংলা উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আদালতের নির্মাণ কাজ স্থগিত করার কোন আদেশ অফিসিয়ালি পাননি দাবি করে বলেন, সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। এখানে এলজিইডি’র কোন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই।