রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুরে পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে দুই উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রের পাশে পটকা বিস্ফোরণে আতঙ্ক এবং একটি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের গুজবে নির্বাচনী পরিবেশে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
শনিবার দিনাজপুরের সদর উপজেলার ১০টি ও বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ভোট হয়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে অধিকাংশ কেন্দ্রে মহিলা ভোটারের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল। দুপুরের পর কেন্দ্রগুলোতে পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের পাশেই সকাল ১০টায় ৫/৬টি পটকার বিস্ফোরণে ভোট কেন্দ্রে মহিলাদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোকাররম হোসেন জানান, এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ৫/৬টি পটকা ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় যেন অন্য কেউ সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে সে জন্য খবর দেওয়ার সাথে সাথে র্যাব, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ এসে ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করেন।
সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের চাঁদগঞ্জ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের গুজবে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। প্রিসাইডিং অফিসার অসীম কুমার মালাকারের সাথে যোগাযোগের পর ওই কেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের গুজব সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। তবে প্রিসাইডিং অফিসার মালাকার জানান, দুপুর ১টার মধ্যে ওই কেন্দ্রের ৩৬৬২ জন ভোটারের মধ্যে শতকরা ৭৭ ভাগ ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার ফুলবন দাখিল মাদ্রাসা, পূর্ব কালিকাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানীগঞ্জ রজত বসাক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদগঞ্জ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শালকী আহমেদীয়া দ্বিমুখী আলিম মাদ্রাসা, শংকরপুর হাই স্কুল, রামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরাইপুর হাই স্কুল, শশরা পরজপুর ফাসিলাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুল ও করিমুল্লাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বীরগঞ্জ উপজেলার চাকাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহিম বকশ দ্বিমুখী হাইস্কুল, ভোগনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাপগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ এবং চকবানারশী সরকারী প্রাইমারী স্কুল ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করতে দেখা যায়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে মহিলা ভোটারদের লাইন ছিল দীর্ঘ। তবে ১২টার পর থেকে পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
ভোটকেন্দ্রগুলোতে নির্ধারিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করেন। বিজিবির দিনাজপুরের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল খালেকুজ্জামান পিএসসি এনডিসি, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আব্দুল হান্নান, পুলিশ সুপার মোঃ রুহুল আমিন, জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।