নয় সচিব রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করলেন

স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, সার্বিক নিরপত্তা ব্যবস্থা ভালো। সোমবার বিকেলে তাঁর নেতৃত্বে ৯টি মন্ত্রণালয়ের নয় জন সচিব রূপপুর প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন দলে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এনডিসি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উল আলম, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মুরতজা আহমেদ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, পরিবশে ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়। স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, প্রকল্প এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই পুলিশ ফাঁড়ি বসবে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় কার্যালয়ে প্রকল্পের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর। তিনি জানান, এই প্রকল্প দুটি ভাগে নির্মিত হচ্ছে। প্রথমত: প্রস্তুতিমূলক এবং দ্বিতীয়ত মূল নির্মাণ কাজ। প্রস্তুতিমূলক কাজের ব্যয় ৫৫০ মিলিয়ন ডলার। প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য ৪টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১ম ও ২য় চুক্তির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। ৩য় ও ৪র্থ চুক্তির কাজ চলছে। ২০১৬ সালের মধ্যেই প্রস্তুতিমূলক সকল কাজ শেষ হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে আইনী বাধ্যবাধকতা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনী বাধ্যবাধকতা সুরাহা করা, সাইট লাইসেন্স সংগ্রহ এবং কন্সট্রাকশন লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। গত মাসে সাইট লাইসেন্স পাওয়া গেছে এবং জুলাইয়ের মধ্যে কন্সট্রাকশন লাইসেন্স পাওয়া যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ২০১৭ সালেই প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার ক্লাবে প্রবেশ করবে বলে তিনি আশা পোষণ করেন। মূল নির্মাণ কাজের জন্য ঋণ চুক্তি আগামী ২৬ জুলাই স্বাক্ষরিত হবে বলে তিনি আরও জানান।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, পৃথিবীর বহু দেশেই এই ধরনের প্রকল্প নির্মাণে বিদেশী কনসালটেন্ট ফার্ম নিয়োগের নজির রয়েছে। কিন্তু আমাদের এই প্রকল্পের বৈশিস্ট্য হলো আমরা কোন বিদেশী কনসালটেন্ট নিয়োগ করিনি। আমাদের এ্যাটোমিক এনার্জি কমিশন এবং আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও এসোসিয়েটদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির দ্বারা সকল কর্মকাণ্ড আর্ন্তজাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালত হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য একটি বড় ধরনের গৌরব বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করতে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ৪/৫ বছর সময় লাগলেও আমাদের সময় লেগেছে মাত্র দেড় বছর।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের উপদেষ্টা রবীন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী, বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান আলী জুলকারনাইন, রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক খুরশীদ আলম, পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো, পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন, ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ নেওয়াজ,  প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.