হাকিম বাবুল, শেরপুর: মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ধৈঞ্চা খুবই কার্যকরী একটি সবুজ সার। এজন্য খরিপ-১ মৌসুমে শেরপুর জেলায় কৃষক পর্যায়ে ধৈঞ্চা চাষ সম্প্রসারণে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এবার কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণের মাধ্যমে জেলায় ২০০ জন কৃষক ৪০ একর জমিতে ধৈঞ্চা চাষ করানো হয়েছে। এসব ধৈঞ্চা আমন মৌসুমের শুরুতেই ক্ষেতের সাথে মিশিয়ে দেওয়ায় সবুজ সার হিসেবে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।
শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের শালচুড়া গ্রামে বুধবার ধৈঞ্চা চাষের ওপর এক প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় দেওয়ানী বাড়ী চত্বরে আয়োজিত মাঠ দিবসে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু প্রধান অতিথি ও ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা শামীমা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। শেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জোবেদা বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা জানান, আমাদের মাটি যেভাবে ব্যবহার হচ্ছে এতে করে মাটির যে ভৌত ও রাসায়নিক গুণাগুণ রয়েছে সেগুলো দিন দিন কমে যাচ্ছে। মাটির গঠন ঠিক রাখার জন্য জৈব সার বা সবুজ সার যেগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়, তেমন একটি সবুজ সার হলো ধৈঞ্চা। আমাদের সামনে অধিক ফসল উৎপাদনের যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, ধৈঞ্চার সবুজ সার মাটির গঠন ও কাঠামো ঠিক রেখে সেই অধিক উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকর অবদান রাখবে। এজন্য কৃষকদের ধৈঞ্চা চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। এতে জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরিমানও আস্তে আস্তে কমে আসবে।
শালচুড়া গ্রামের ধৈঞ্চা চাষি কৃষক আব্দুর রশিদ রেনি ও কৃষানী চামেলী আক্তার জানান, মানুষের শরীর সুস্থ রাখতে যেমন খাবার ও ভিটামিনের দরকার আছে, তেমনি মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায়ও খাবারের প্রয়োজন আছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ধৈঞ্চা মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকরী, সেইজন্যই আমরা আমন ফসলের আগে ক্ষেতে ধৈঞ্চার আবাদ করেছি। সেই ধৈঞ্চা গাছ আবার মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছি। আশা করছি, সামনে আমাদের জমিতে ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সারের ব্যবহার কম লাগবে এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো রেখে অধিক উৎপাদন করা সম্ভব হবে।