জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আড়ুয়াকান্দি কবরস্থানে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাইফুল ইসলাম মামুন (২৫) নামে এক শিবির নেতা মারা গেছেন। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সাইফুল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি শৈলকুপা উপজেলার মুচড়াপাড়া পুটিমারী গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের একটি টহলদল ঝিনাইদহ-মাগুরা সড়কে আড়ুয়াকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে শিবিরের নেতা-কর্মীরা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ৪/৫ টি হাতবোমা ছুড়ে মারে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে কমপক্ষে ২০মিনিট গুলি বিনিময় হয়। বন্দুকযুদ্ধ শেষে শিবির নেতা-কর্মীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ সাইফুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরো জানান, বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি, পাঁচটি বোমা ও তিনটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের দুই কনস্টেবল ফয়সাল হোসেন ও সুমন হোসেন আহত হয়েছেন বলেও তিনি জানান। সাইফুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে সাইফুলের বাবা লুৎফর রহমান অভিযোগ করেন, ১ জুলাই (শুক্রবার) রাত ২.১৫টার সময় শহরের পবহাটী গ্রামের টুলু মিয়ার বাড়ির ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ তার ছেলেকে আটক করে নিয়ে যায়। সাইফুলের আটকের খবর মোবাইল ফোনে জানানো হয়। বাবার ভাষ্যমতে, খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে তিনি ও কাজিপাড়া গ্রামের তপন কুমার ঘোষ ঝিনাইদহ সদর থানায় খবর নিতে আসেন।
এ সময় দূর থেকে দেখেন সাইফুল থানা হাজতে আছে। দূর থেকে তাদের ইশারাও হয়। বিকাল ৩টার দিকে খাবার দিতে গেলে থানা থেকে জানানো হয়, সাইফুল নামে থানায় কেউ নেই।
সাইফুলের মামাতো ভাই ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন জানান, সাইফুলকে পুলিশ গ্রেফতারের পর আমরা ফুলহরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল ইসলাম বিপুল ও শৈলকুপার এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাইকে জানাই। তারা বলেছিলেন, শিবির করলে আমরা কিছুই করতে পারব না। এরপর থেকে আমরা চুপ হয়ে যাই।
নাসির জানান, পুলিশের হাতে আটকের ১৮ দিন পর মঙ্গলবার সকালে শুনছি সাইফুল পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, নিহত সাইফুল শিবিরের ভাটই অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ফুলহরি ইউনিয়নের সাবেক মাদ্রাসা বিষয়ক সাধারণ সম্পাদক ও শিবিরের সাথী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল। বন্দুকযুদ্ধের আগে সাইফুলকে আটকের কথা অস্বীকার করেন তিনি।