হাকিম বাবুল, শেরপুর: শেরপুরে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ভাঙনে গত দুই দিনে চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের কুলুরচর বেপারীপাড়া এলাকায় ৫০টি ঘর নদীগর্ভে বিলীণ হয়েছে। ওই এলাকার শতাধিক ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ডাকপাড়া এলাকাতেও বন্যার পানি বেড়েছে। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের সহায়তায় এখনও সরকারি-বেসরকারি কোনও সংস্থা বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে আসেনি বলে স্থানীয় লোকজন ক্ষোভের সাথে জানিয়েছেন।
কুলুরচর বেপারীপাড়ার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন (৭০) জানান, এবার ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে তার দুটি ঘর নদীতে চলে গেছে। হঠাৎ করে ভাঙন শুরু হওয়ায় কিছুই রক্ষা করতে পারেন নাই। কোনরকমে জীবন নিয়ে বউ-বাচ্চাসহ দৌড়ে রক্ষা পেয়েছেন। আব্দুল জলিল মিয়া (৮০) বলেন, ‘মুড়ি-চানাচুর বিক্রি করে খাই। নদীতে ভিটেমাটি হারিয়ে আমি এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। কোথায় থাকবো, কীভাবে থাকবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীণ হয়েছে। অনেকের বাড়িতে পানি ওঠেছে, কিন্তু কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসলোনা। আমরা বড় কষ্টে আছি’।
বৃদ্ধা জমিলা খাতুন (৭৫) জানান, ‘চাইয়া-চিন্তা খাই। কিন্তু আটদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি, বন্যার কারণে বাইর অইতে পারতাছি না। কোথাও যাবার যোগাড় নাই। নদীর পানিই খাইয়া বাইচ্চা আছি। কেউ আমগরে খোঁজও নিতে আইলোনা’।
এ বিষয়ে চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের বিদায়ী চেয়ারম্যান মো. আকবর হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রতে আমি বেপারীপাড়ার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বিষয়টি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবীবুর রহমান বলেন, কুলুরচর বেপারীপাড়ার ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।