আমিনা বিলকিস ময়না, সাতক্ষীরা: মজুরি বাড়ানোর দাবিতে সাতক্ষীরার সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলসে শ্রমিক ধর্মঘট চলছে। সোমবার শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনের মতো অচল হয়ে আছে মিলটি।
আজ মঙ্গলবার সকালেও কাজে যোগ না দিয়ে সাড়ে তিনশ’ শ্রমিক মিলের প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় । পরে তারা সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে।
শ্রমিকদের দাবির সাথে সংহতি জানি কোনো শ্রমিক সংগঠন তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি বলে জানান শ্রমিকরা।
শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক মনির হোসেন বলেন, দাবি আদায়ের জন্য তারা সারারাত মিলগেটে সভা করেছেন। দৈনিক মজুরি ন্যূনতম তিনশ’ টাকা না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না বলে জানান।
শ্রমিক সংগঠক শারমিন আক্তার আনোয়ারা জানান, একজন শ্রমিক দৈনিক ১১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা মজুরি পান। গত এক বছর ধরে মিল কর্তৃপক্ষের কাছে তারা মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নেয়নি । এতে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামতে হয়েছে তাদের।
শ্রমিক নেতা রেক্সোনা বলেন, নানা ধরনের হুমকি মাথায় নিয়েও তারা দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনরত বেশিরভাগ শ্রমিক না খেয়ে আছেন।
শ্রমিক পবিত্র মন্ডল জানান, দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করে মজুরি যা পান তাতে যাতায়াত খরচ বাদ দিয়ে তিনবেলা দু মুঠো ডাল-ভাতও জোটে না তাদের। এরকম একটি মানবিক দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা সাধারণ শ্রমিকদের আন্দোলনে কোনো শ্রমিক সংগঠন তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি।
শ্রমিক জাকির হোসেন জানান, মিল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে সব সময় অবিচার করে। বিদ্যুৎ না থাকলে তাদের কর্মঘণ্টা কেটে নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শ্রমিক নেতা গুরুপদ সরকার জানান, সারাদেশে কোথাও এতো কম মজুরি নেই। আমরা মাস শেষে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেতন পাই। তাতে ঘর ভাড়া দেওয়াই কষ্টকর। ভাত খেতে না পেলে কাজ করবো কেন! তিনি বলেন, বেতন ন্যূনতম দৈনিক ৩০০ টাকা করা না হলে মিল অচল করে দেওয়া হবে। বুধবারের মধ্যে দাবি মানা না হলে বড় কর্মসূচি প্রদান করবে বলে জানায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলের ব্যবস্থাপক আবু হানিফ বলেন, আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। উপর থেকে সিদ্ধান্ত আসলে বেতন বৃদ্ধি করা হবে। এ পর্যায়ে তার কিছু করার নেই।