পিরোজপুর শহরে এক ব্যতিক্রমী নার্সারি ও পাখির অভয়াশ্রম

রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): পিরোজপুর শহরের থানা সড়কে গড়ে উঠেছে ফুল, ফল, ঔষধি ও বনজ গাছের এক ব্যতিক্রমী নার্সারি আর পাখ-পাখালির অভয়াশ্রমের জন্য সবুজ উদ্যান। এই চ‌ত্ত্বর মানুষের ছাদ কৃষিকে জনপ্রিয় করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা।

pirojpur nursary

রোববার সদর থানার সামনে স্থাপিত মালঞ্চ নামের এ সবুজ চত্ত্বর আর পাখির অভয়াশ্রমের উদ্বোধন করেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. ওয়ালিদ হোসেন। পরিবেশ সাংবাদিক ও সুন্দরবন সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক মুনিরুজ্জামান নাসিম আলী এ ফুল, ফল, ঔষধি ও বনবৃক্ষের চারা উৎপাদন আর বিপণনের নার্সারির উদ্যোক্তা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু আশ্রাফ, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ওয়ারিসুল কবীর, বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার দিবাংকর রায়, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাচনাইন পারভেজ, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাংবাদিক গৌতম চৌধুরী, সাবেক পৌর কমিশনার নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকীব, পৌর কমিশনার সাঈদুল্লাহ লিটনসহ অন্যরা।

মালঞ্চের ব্যবস্থাপক সাইফুল্লাহ হুমায়ূন জানান, থানার সামনে জেলা পুলিশের অব্যবহৃত একখণ্ড জমিতে স্থাপিত মালঞ্চে রয়েছে নানা ফুল, ফল, ঔষধি ও বনজ গাছের চারার ব্যতিক্রমী সংগ্রহ। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে এখানে রঙ্গন, মুচন্ডা, স্লোপাইনদিয়া, আলমান্দা, ড্রেসিনা, কৈলাস, জবাসহ হরেক রকম ফুল এবং ফলের সেরা আম, মাল্টা (থাইল্যান্ড ও ইন্ডিয়ান), থাই পেয়ারা, স্বরূপকাঠির পেয়ারা, কমলা, কামরাঙা, জামরুল (সবুজ), আমড়া (থাই), কামরাঙা (থাইল্যান্ড ও দেশি), চালতা ইত্যাদির সমাহার হয়েছে।

থাইল্যান্ড জাতের সূর্য ড্রিম, পালমা, ডগমাই, মৌরাস, কাঁচা মিঠা, হাইব্রিড বৈশাখী, আম্রপালি, মল্লিকা, ফজলি, হিমসাগর, ইন্ডিয়ান বৈশাখী ও আশ্বিনা আমের কলম পাওয়া যায় এখানে। ভেষজের মধ্যে রয়েছে ঘৃতকুমারী, তেজপাতা, হরিতকি, আমলকি, ডায়বেটিস পাতা ইত্যাদি। আরও রয়েছে বনজ নানা গাছের চারা। এসবই বাণিজ্যিকভাবে বিপণন হবে।

পাখির অভয়াশ্রমের সংরক্ষক ও ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, শহরের থানাপাড়া, নড়াইল পাড়া ও আমলাপাড়ার গাছে গাছে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখির বসবাস। ঘুঘুর ডাক, শালিকের কিচিরমিচির আর বকের ডানা ঝাপটানোর শব্দে ঘুম ভাঙে পাড়াবাসীর। এ সব পাখির বসবাস, বিচরণ ও প্রজননের জন্য গাছ ও দালানে একশ হাড়ি বাঁধার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেখানে বাসা বেঁধে পাখিরা ডিম দেবে ও বাচ্চা ফোটাবে।

কৃষিবিদ ও প্রবীণ সংস্কৃতিকর্মী আফম রেজাউল করীম বলেন, এই উদ্যোগে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ প্রযুক্তি সহযোগিতা দেবে।

কৃষি লেখক বিশু দাস বলেন, শহরে মালঞ্চ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য ছাদ কৃষিকে জনপ্রিয় করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.