স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদীর গৃহহীন ৩০ পরিবার নতুন বাড়ির সাথে বিদ্যুৎ, বন্ধুচুলা, পানি ও রান্নার তৈজসপত্র পেয়ে মহাখুশী। ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামে সরকারি উদ্যোগে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা গুচ্ছ গ্রামে ৩০টি পরিবারকে পূর্ণবাসন করা হয়েছে । গৃহহীন পরিবারগুলো বসবাসের জন্য গত বৃহস্পতিবার নতুন বাড়ি ও বাড়ি চাবি পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত।
গ্রামবাসীরা জানান, ৪ই আগষ্ট দুপুরে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সরকারের ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপি গুচ্ছ গ্রাম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আমিনুল ইসলাম, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবব উল আলম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু মাসুদ, জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোশতাক আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিল মাহমুদ ও ভাইস চেয়ারম্যান নারী মাহজেবিন শিরিণ পিয়া।
ঈশ্বরদী উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার জাহিদ নেওয়াজ জানান, প্রায় সাড়ে তিন একর সরকারি খাস জমির উপর এই গুচ্ছ গ্রাম নির্মিত হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ করেছে। যে ৩০টি পরিবারকে নতুন বাড়ির চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে পরবর্তীতে পাবনা জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে গুচ্ছগ্রামবাসীদের নিজ নিজ বাড়ির কবুলিয়ত দলিল প্রদান করা হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বজলুর রশীদ জানান, প্রতিটি পরিবারকে ২০ ফুট লম্বা ও ১১ ফুট চওড়া দুই কক্ষের একটি টিনের ঘর দেওয়া হয়েছে। রান্নার জন্য বারান্দায় বন্ধু চুলা স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরেই বিদ্যুতের লাইন দেওয়া হয়েছে। প্রতি পরিবারের জন্য আলাদা পাঁচ রিং বিশিষ্ট স্যানিটারি টয়লেটের ব্যবস্থা, ৩০ পরিবারের জন্য ছয়টি টিউবওয়েল এবং মাল্টিপারপাস কমিউনিটি হল স্থাপন করা হয়েছে। গুচ্ছগ্রামবাসীদের যাতায়াতের জন্য দুই হাজার ফুট রাস্তা নির্মাণ, এমনকি রান্নার তৈজসপত্রও সরবরাহ করা হয়েছে।
নওদাপাড়া গুচ্চগ্রাম কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, ইতোপূর্বে দুই দফায় এখানে ১০০টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। এবারে আরো ৩০টি এর সাথে যুক্ত হলো। পুরোনো বাড়ির চেয়ে নতুন বাড়িগুলো আধুনিক এবং সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। গুচ্ছগ্রামের জন্য রাস্তা তৈরির পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও বন্ধু চুলার সুবিধা রয়েছে। এসময় তিনি বলেন, দরিদ্র ও গৃহহীন মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় এখানকার মানুষ ভূমিমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
নতুন বরাদ্দ পাওয়া মাসুদ (৪৪) জানান, আমি ভ্যান চালিয়ে উপার্জন করি। এর আগে উত্তর বাঘইলে রেল লাইনের ঢালে ঘর বানিয়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করতাম। স্বপ্ন ছিল একটি বাড়ির। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের কোন পথ ছিলো না। মন্ত্রী আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছে। তাই এখন নতুন বাড়ি পেয়ে কি যে ভাল লাগছে, তা বলে বোঝাতে পারবো না। আরেক ভ্যান চালক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি এতোদিন মারমী গ্রামে অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকতাম। এখন নিজ বাড়ি পেলাম। এজন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদয়ের পাশাপশি শেখ হাসিনার সরকারের জন্য আল্লাহর দরবারের দোয়া প্রার্থনা করছি।