বাগেরহাট প্রতিনিধি: নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং গত তিন দিনের ভারী বর্ষণে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলা পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তাঘাট ও বস্তি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী, কচুয়া ও সদর উপজেলার অন্তত: ৫০টি গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরের গ্রামগুলো দৃশ্যত তলিয়ে গেছে।
এসব এলাকার বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল-মাদ্রাসা, ফসলের মাঠ জলমগ্ন হয়ে আছে। অনেকস্থানে বাড়ি-ঘরে পানি উঠে রান্না-খাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্লুইজ গেটগুলো দিয়ে ঠিকমত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বিপর্যয় আরও বাড়ছে। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জেলার অধিকাংশ মৎস্য ঘের ও পুকুর জোয়ারের পানিতে ভেসে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে দুই শতাধিক চিংড়ি ঘেরের অবস্থা খুবই নাজুক বলে চাষিদের সূত্রে জানা গেছে। বীজতলা ও পানবরজের মারত্মক ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে নানা রোগব্যধি ছড়িয়ে পড়ছে।
নদ-নদীতে তীব্র স্রোত ও উত্তাল ঢেউয়ের কারণে বেড়িবাঁধ ও সড়কে ভাঙন বেড়েছে। মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল, চিতলমারী, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার অন্তত ১২টি স্থানে বেড়িবাঁধ ও সড়কে ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। রবিবার বাগেরহাট সদরের ইউএনও শরীফ নজরুল ইসলাম বারইপাড়া, বিষ্ণুপুর, গোটাপাড়া ও কাড়াপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম সরেজমিন পরিদর্শন করে জানান, ভাঙনরোধে চেষ্টা করা হচ্ছে।
রবিবার দুপুরে জোয়ারের সময় ভৈরব নদের পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের প্রাণকেন্দ্র রাহাতের মোড়, ডাকবাংলা, কাপুড়ে পট্টি, সাধনার মোড়, পুরাতন বাজার, মিঠাপুকুর পাড়, লোকাল বোর্ড ঘাট, বাসবাটি ও খারদ্বারসহ বিভিন্ন এলাকা।
বাগেরহাট পৌরসভায় পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ পৌরসভার বাসিন্দাদের।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আফতাব উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে পানের বরজ ও ধানের বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।