প্রতিনিধি, খুলনা: সুন্দরবন রক্ষায় খুলনার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী শেখ ইঞ্জামামুল হক।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা দেশ কিংবা খুলনার উন্নয়নের বিরোধী নই, আমরাও দেশের উন্নয়নে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই কিন্তু কয়লাভিত্তিক কিংবা সুন্দরবন ধ্বংস করে নয়। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় কোনোভাবেই রামপাল তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ সর্বনাশা সিদ্ধান্তের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুন্দরবনের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও অর্থনীতির যে ভয়াবহ ক্ষতি হবে তা দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকা, বিভিন্ন গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ থেকে আমরা জানতে পেরেছি। তাই খুলনার সন্তান হিসেবে বিবেকের তাড়নায় আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা দলমত নির্বিশেষে একই প্লাটফর্মে এসে একতাবদ্ধ হয়ে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ অবিলম্বে বন্ধের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি খুলনা জেলা শাখার আহ্বায়ক এস এম শাহনওয়াজ আলী, সদস্য সচিব এ্যাড. মো. বাবুল হাওলাদার, খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক রসু আক্তার, পরিবেশ সুরক্ষায় উপকূলীয় জোটের সদস্য সচিব এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, চেতনা ৭১-এর সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম এ রহিম, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌশান ফাতিমা, উশান ফাতিমা, মৃত্যুঞ্জয় দাস, আজিজুল ইসলাম, অবন্তি কুন্ডু, রেহেনুমা জামান, মো. আতিকুর রহমান, মো. আলামীন শেখ, সৌরভ সাহা, মাসুম হাওলাদার, মুতাসিম বিল্লাহ সাকিব, এস এম আরাফাত জয়, মাহবুবুল হক, প্রদীপ বিশ্বাস প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়ে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ এবং ২ লাখ টন বটম অ্যাশ সৃষ্টি হবে। এ ফ্লাই অ্যাশ, বটম অ্যাশ, তরল ঘণীভূত ছাই ব্যাপকমাত্রায় পরিবেশ দূষণ করে, কারণ এতে আর্সেনিক ও বিভিন্ন ভারী ধাতু যেমন: পারদ, সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম, বেরিলিয়াম, বেরিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, রেডিয়াম মিশে থাকে। ফলে সুন্দরবনের পশুপাখি-বৃক্ষ-লতাপাতাসহ অসংখ্য প্রাণ ও ইকোসিস্টেম ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। এছাড়াও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিষাক্ত সালফার ও নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড গ্যাস নির্গমনের ফলে মানুষ-গাছপালা-জীবজন্তুর জীবন বিপন্ন হবে।