গণহত্যাকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হোক -শাহরিয়ার কবির

হাকিম বাবুল, শেরপুর প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির। ১৯ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী শহরের সেঁজুতি বিদ্যানিকেতন প্রাঙ্গণে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

Sherpur Pic-1 (Sahriar Kabir)
মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

এ সময় শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে ১৯৭২ সালের সংবিধানে আবার ফিরে যেতে হবে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের কাছে এ গণহত্যার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে। বঙ্গবন্ধু তাঁর সময় যুদ্ধাপরাধীদের ৭৩টি ট্রাইবুনাল করে ১১ হাজার গণহত্যাকারীর মধ্যে ৭১২ জনের মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দিয়েছেন। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ৭৫২ জনের বিচারকাজ সমাপ্ত করেছেন। শাহরিয়ার কবির বলেন, আমাদের দেশে আইএসের গডফাদার হলো জামায়াতে ইসলামী। তারা ইসলামের দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। আর ১৯৭৮ সালের রাজনৈতিক দল বিএনপি যুদ্ধাপরাধি-জামায়াতীদের এদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে রাজনীতি করছে। তাই জামায়াতে ইসলামীসহ সকল অঙ্গসংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সোনার বাংলা গঠনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নালিতাবাড়ী শাখার সভাপতি নাজিমদ্দিন মাস্টারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য মানবাধিকার কর্মী অ্যারোমা দত্ত। অন্যান্যের মাঝে নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হক, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এর আগে বিকেলে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ নালিতাবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত সোহাগপুর বীরকন্যাপল্লী (সাবেক নাম বিধবপল্লী) পরিদর্শন করেন এবং শহীদ পরিবারের বিধবাদের খোঁজখবর নেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের ৩০ জন বিধবার মাঝে ১টি শাড়ি, একটি চাদর ও নগদ তিন হাজার টাকা করে বিতরণ করেন। এসময় তারা বিধবাদের সাথে কিছু সময় কাটান।

বীরকন্যাপল্লীতে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, শুধু প্রশাসনকে দিয়ে জঙ্গি দমন করা সম্ভব হবে না, পাশে জনগণকে থাকতে হবে। জঙ্গি দমনে এই মুহুর্তে যে ব্যবস্থা আছে, তা যথেষ্ঠ নয়। এটা দিয়ে সাময়িকভাবে জঙ্গি দমন করা যাবে, কিন্তু জঙ্গি নির্র্মূল সম্ভব নয়। জঙ্গি নির্মূল করতে গেলে বহুমূখী পদক্ষেপ নিতে হবে, তার মধ্যে জনগণের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে বেশি থাকতে হবে। আইন পরিবর্তন করে সাক্ষ্য আইনের বাইরে জঙ্গিদের দ্রুতবিচার করতে হবে। এতে জনগণের ভোগান্তি কমবে। আমরা সাক্ষিদের নিরাপত্তা আইনের কথাও বহু বছর ধরে বলছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.