মধুপুরে যৌতুকের জন্য নববধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, থানায় অভিযোগ

আব্দুল্লাহ আবু এহসান, মধুপুর (টাঙ্গাইল): তিন লাখ টাকা যৌতুকের জন্য টাঙ্গাইলের মধুপুরে নববধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বিয়ের ২৩ দিনের মাথায় শনিবার সন্ধ্যায় মধুপুর পৌর শহরের টেকি বেপারি পাড়া এলাকায় নববধূ সালমার (২২) ভাগ্যে জুটেছে এমন নির্যাতন। সালমা টেকি বেপারি পাড়ার মৃত মনছুর বেপারির মেয়ে। একই পাড়ার সায়েদ আলী বেপারির ছেলে খোরশেদ আলী (২৮) ও সালমা অভিভাবকদের অজান্তে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তারা উভয়ই ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুির করেন।

Modhupur salma
নববধূ সালমাকে গাছে বেধে নির্যাতন করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, প্রতিবেশি সালমা ও খোরশেদ আলীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে বেশ কিছুদিন আগে। সালমা গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গিয়ে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি নেওয়ার সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয় ঘটে। সেখানে বসবাসের সময় তাদের সম্পর্ক টের পেয়ে এলাকাবাসী গত ২৯ জুলাই ৪ লাখ টাকার কাবিন নামায় বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন। অভিভাবকরা তাদের এ বিয়ের খবর শুনে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের গাজিপুরের কোণাবাড়ি থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। এ সময় স্বামীর অভিভাবকরা ওই নববধূর নিকট ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে বলেন এ টাকা দেওয়া হলেই বিয়ে মেনে নেওয়া হবে, নচেৎ না।

সালমার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এ দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে সালমা জানালে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। এরই এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন সালমাকে বাড়ির কাছেই রাস্তার পাশে একটি গাছে বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন। সালমা অভিযোগ করেন, এ সময় স্বামীর বড় ভাই আজমত আলী, আজমতের স্ত্রী ইয়ারন, হাসমত আলী, হাসমতের স্ত্রী শিরিন আক্তার, শাশুড়ি আছিয়া বেগম ও শ্বশুর সায়েদ আলীসহ অনেকে তাকে মারমিট করেন। এ খবর শুনে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। সাখাওয়াত হোসেন জানান, অভিভাবকরা মেনে না নেওয়ায় বিবাহিত সালমা শ্বশুরবাড়িতে জোর করে প্রবেশ করতে গেলে তারা তাকে গাছের সাথে বেঁধে রাখেন।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, খবর পেয়ে রোববার ঘনটাস্থলে এসআই ফকরুল ইসলামকে পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মধুপুর থানার এসআই ফকরুল ইসলাম জানান, নির্যাতিত নববধূ সালমার ভগ্নিপতি আ. ছামাদ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.