মিলন কর্মকার রাজু , কলাপাড়া (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর কলাপাড়া পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পায়রা বন্দর থেকে তিন দশমিক ৮০ নটিক্যাল মাইল দূরে রাবনাবাদ নদের মোহনায় নোঙর করে রাখা জাহাজ মাদার ভ্যাসেল থেকে শনিবার বিকাল ৩টায় লাইটার জাহাজ এম ভি চান সরদার আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু করে। এর উদ্বোধন করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান। এ সময় মদিনা গ্রুপের উপদেষ্টা গোলাম হোসেন, ডিজিএম মাহবুবু আলম উপস্থিত ছিলেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মদিনা গ্রুপ মালয়েশিয়া থেকে ওই জাহাজে করে ১২ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন ক্লিংকার নিয়ে আসে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কয়েক দফা চেষ্টার পরও পণ্য খালাস শুরু করা যায়নি। ফলে ২২ আগস্ট চট্রগ্রাম বন্দরে গিয়ে চার হাজার মেট্রিকটন পণ্য খালাস করে। আবহাওয়া ভালো হওয়ায় ৩ সেপ্টেম্বর পুনরায় জাহাজটি পায়রা বন্দরের অভ্যন্তরীণ নোঙরে পণ্য নিয়ে আসে এবং দুপুরে পণ্য খালাস শুরু করে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের ২০ দিন পর পায়রা বন্দরে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হলো।
এম ভি এফ এস বীচ জাহাজের ক্যাপ্টেন ভিয়েতনামের দেয়ান মা ফু বলেন, বাংলাদেশের নতুন সমুদ্র বন্দরে এসে আমার খুব ভালো লেগেছে। রাবনাবাদ চ্যানেলের পায়রা বন্দরে জাহাজ নিয়ে প্রবেশ করতে আমার কোনো সমস্যা হয়নি।
মদিনা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম সাংবাদিকদের জানান, এম ভি ফরচুন বার্ড প্রথম পায়রা বন্দরে আসা প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ। কিন্তু ওই জাহাজ এখানে পণ্য খালাস করতে পারেনি। এফএস বীচ পায়রা বন্দরে আসা দ্বিতীয় জাহাজ। শনিবার এই জাহাজ পায়রা বন্দরে প্রথম জাহাজ হিসেবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করেছে। আজ থেকে এই বন্দরে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হলো।
গত ১ আগষ্ট থেকে রাবনাবাদ চ্যানেলের পায়রা সমুদ্র থেকে প্রায় ৩০ নটিক্যাল মাইল দূরে সাগরের হিরন পয়েন্টে ৫২ হাজার ৩৭৯ মেট্রিকটন পাথর নিয়ে এমভি ফরচুৃন বার্ড ২২ দিন অপেক্ষা করার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পণ্য খালাস করতে না পেরে ২২ আগস্ট কুতুবদিয়া চলে যায়।
লাইটার জাহাজের মাস্টার নিজাম উদ্দিন বলেন, পায়রা বন্দরে প্রথম জাহাজের মাস্টার হিসেবে পণ্য খালাস কার্যক্রমে থাকতে পেরে আমি খুশি।
পায়রা বন্দরের চিফ হাইড্রোগ্রাফার এম হাবিব উল আলম বলেন, আমি চট্রগ্রাম বন্দর থেকে এফএস বীচ জাহাজটিকে পথ দেখিয়ে পায়রা বন্দরে নিয়ে এসেছি। পায়রা বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা জাহাজের জন্য নৌ-বাহিনী এবং কোস্ট গার্ড সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এতোদিন পায়রা বন্দরে পণ্য খালাস করা যায়নি। আগামী দুই বছরের মধ্যে রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কাজ শেষ হলে ১২-১৪ মিটার গভীর জাহাজও এই বন্দরে ঢুকতে কোন অসুবিধা হবে না।