হাকিম বাবুল, শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় মাসকলাই, গম, ভুট্টা, সরিষা, মুগ ফসলের বীজ ও সার বিতরণ শুরু হয়েছে। শেরপুর সদর উপজেলায় এবার এক হাজার ৭০০ কৃষক বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার সার-বীজ পাচ্ছেন।
মঙ্গলবার সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা কৃষি অফিস আয়োজিত এ কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির সার-বীজ বিতরণ উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু। এসময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বায়েজিদ হাসান, খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এ এফ এম মোবারক হোসেন, কামারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারি চাঁন, অতিরিক্ত উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি আব্দুল মালেক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ও উপকারভোগী কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে খরিপ-২ মৌসুমে মাসকলাই, রবি মৌসুমে গম, ভুট্টা, সরিষা এবং খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীণ মুগ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সদর উপজেলায় এবার ১ হাজার ৭০০ কৃষককে এ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রত্যেক কৃষককে এক বিঘা জমি আবাদের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ ও সার বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। প্রতিটি কৃষি ব্লকে চাষের উপযোগিতা অনুযায়ী ১০-১৫ জন কৃষককে একসাথে ক্লাস্টার আকারে এসব প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ফসলের উৎপাদন আগের তুলনায় ভালো হবে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসের হিসাব মতে, মাসকালাই আবাদের জন্য ২০০ জন কৃষকের প্রত্যেককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়। সরিষা আবাদের জন্য ৫৭০ জন কৃষকের মধ্যে প্রতি কৃষক ১ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পাচ্ছেন। গম আবাদের জন্য ৮৫০ জন কৃষককে ২০ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেওয়া হচ্ছে। ভুট্টা আবাদের জন্য ৩০ জন কৃষকের প্রত্যেকেই পাচ্ছেন ২ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার। গ্রীষ্মকালীন মুগ আবাদের জন্য ৫০ জন কৃষককে দেওয়া হচ্ছে ৫ কেজি করে বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার।
বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষকদের এসব ফসলের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোকপাত করেন ডিএই’র অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এ এফ এম মোবারক হোসেন। প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু ও বিশেষ অতিথি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বায়েজিদ হাসান তাদের বক্তব্যে বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে অনেকেই এসব কৃষি প্রণোদনার বিনামুল্যের সার-বীজ নিয়ে ফসল আবাদ না করে বাজারে বিক্রি করে দেন কিংবা ভেজে খেয়ে ফেলেন। এজন্য প্রকৃত কৃষক যারা এসব আবাদ করবেন, তারা যাতে এসব সার-বীজ পান সেটা নিশ্চিত করতে হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে তালিকা তৈরিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা অনেক সময় মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে থাকেন। যে কারণে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। তবে উপজেলা পরিষদ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে।