স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদী শহরের ফতেমোহাম্মদপুরে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্য ও অবসরপ্রাপ্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১৯২৪ সালে ব্রিটিশ আমলের রেলওয়ে ডিসপেনসারি এখন চিকিৎসসেবা ও ওষুধ ছাড়াই চলছে। এতে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত রেলের শ্রমিক-কর্মচারীরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ। প্রায় শত বছরের পুরানো এই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে চিকিৎসক শুন্য। এছাড়া ওষুধ স্বল্পতার কারণে রেল শ্রমিক-কর্মচারীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে তাদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে হচ্ছে।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে ডিসপেনসারি সূত্রে জানা যায়, দুই বছরের বেশি সময় ধরে এখানে কোনও চিকিৎসক নেই। এখানে কর্মরত দুইজন নারী ফার্মাসিষ্ট রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। বড় ধরনের কোনও সমস্যা হলে রোগীদের পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আলী আজগর নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী রেল কর্মচারীরা আমৃত্যু চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। কিন্তু ঈশ্বরদী রেলওয়ে ডিসপেনসারিতে গিয়ে কোনও চিকিৎসা পাওয়া যায় না। প্রয়োজনীয় ওষুধও সরবরাহ করা হয় না। চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা তেমন যায় না। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা গল্প-গুজব করেই দিন কাটিয়ে দেন। এখন আর আমরা ওখানে চিকিৎসা নিতে যাই না।
ফার্মাসিষ্ট তানিয়া নাজনীন জানান, এই প্রতিষ্ঠানে সাত জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ রয়েছে। একমাত্র এমবিবিএস চিকিৎসক ছাড়া বাকি ছয়জন রয়েছেন। চিকিৎসক না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত হচ্ছে। ২০১৪ সালের ২ আগষ্টের পর হতে এখানে আর কোনও চিকিৎসক যোগদান করেননি। রেলের চিফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও) ফার্মাসিষ্টদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য লিখিত নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা (ফার্মাসিষ্টরা) চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছি। অপর ফার্মাসিষ্ট মাহাবুবা আক্তার জানান, এখানে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫জন রোগী সেবা নিতে আসেন। আমরা আমাদের সাধ্য মতো তাদের সেবা প্রদান করে থাকি।
পাকশী রেলওয়ে ডিভিশন মেডিক্যাল অফিসার (ডিএমও) পরিতোষ কুমার চক্রবর্তী জানান, বাংলাদেশ রেলওয়েতে তীব্র চিকিৎসক সংকট রয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ জন চিকিৎসক রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নিয়োগের জন্য মনোনীত করেছেন। এরা নিয়োগপ্রাপ্ত হলেই আগামী দুই মাসের মধ্যেই ঈশ্বরদী রেলওয়ে ডিসপেনসারিতে একজন চিকিৎসক যোগদান করবেন বলে আশা করছি।