স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): ওষুধ সরবরাহ না থাকায় ঈশ্বরদীর মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না সাধারণ ও গরিব মানুষ। ঈশ্বরদীর ৭টি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ৫৬টি স্যাটেলাইট ক্লিনিকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ না থাকায় সাধারণ মানুষ কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নয় মাস ধরে এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অথচ প্রতিকারের কোনও উদ্যোগ নেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের।
ঈশ্বরদী উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ জনপদে মা-শিশু ও পরিবার-পরিকল্পনা এবং সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার প্রত্যেক ইউনিয়ন ও বিভিন্ন গ্রামে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক চালু করে। এসব সরকারি সেবাকেন্দ্র হতে প্রতিমাসে ঈশ্বরদীর প্রায় তিন হাজার মানুষের সেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ওষুধ সঙ্কটের কারণে তারা বর্তমানে পূর্ণ সেবা পাচ্ছে না।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে মাসে একটি ‘কিটবক্স’ দেওয়া হতো যাতে প্রায় ২৭ প্রকার ওষুধ থাকে। এছাড়াও স্যাটেলাইট ক্লিনিকে দেড়মাস পর পর ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
চলতি ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে। ফলে এসব সেবাকেন্দ্রে মানুষ প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে রোগীদের শুধুমাত্র ব্যবস্থাপত্র নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। আর্থিক সঙ্কটের কারণে অনেকেই বাজার থেকে ওষুধ কিনতে না পারায় বিপদে পড়েছেন।
সাঁড়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কেন্দ্রে গিয়ে জানা যায়, ওষুধ না পেয়ে রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন। কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল হোসেন জানান, ওষুধ না থাকায় শুধু ব্যবস্থাপত্র দিতে হচ্ছে। এ কারণে রোগীরা এখানে চিকিৎসা সেবা গ্রহণে আসার আগ্রহ হারাচ্ছে। একই অবস্থা পাকশী ইউনিয়নেও। কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। রোগীর আর কোন চাপ নেই। এখানে আগে প্রতিদিন ৭৫-৮০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতো। কিন্তু এখন ওষুধও নেই, রোগীও নেই। দিয়াড় বাঘইল গ্রামের মরিয়ম বেগম (৪৫), আফরোজা বাণু (৩৯) ও নূরজাহান বেওয়া (৪২) এই কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য এসেও শুধু ব্যবস্থাপত্র নিয়ে খালি হাতে ফিরে গেলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, ওষুধ সরবরাহ না থাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো কার্যত অচল হতে চলেছে। তবে ওষুধ সরবরাহ নিয়মিত হলে পরিস্থিতি আবার আগের মতো স্বাভাবিক হবে এবং গরিব জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা পাবেন।