খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিছুর রহমান বিশ্বাষ শনিবার সকালে খুলনার সুধীবৃন্দের সাথে ‘স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নগর কর্তৃপক্ষ, টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শর্ত’ শীর্ষক এক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগামী জানুয়ারি থেকে নগরীর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। খুলনা সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে নাগরিকবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এডিবি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে সাত/আটশ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যাবে এবং এবারের বাজেটে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পুরো কার্যক্রমকে উন্নত করা হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকে এ সেক্টরে আউট সোর্সিং ওয়ার্কার নিয়োগ দেয়া হবে এবং তারা সরাসরি বাসা থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করবে। পানি নিস্কাশন কার্যক্রম জোরদার করতে খোলা ড্রেন ভেঙে পাইপ ড্রেন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ও নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনেও সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র উল্লেখ করেন।
নগরীতে পাঁচ হাজার ইজিবাইক চলাচলে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের পরেই সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থা নিবে। নগরীতে ‘স্পীড হাম’ তৈরি করা হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এগুলো তৈরি করা হচ্ছে পথচারী ও প্রতিবন্ধীদের পারাপারের উদ্দেশ্যে। এতে কোন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ হবে। তিনি আরও জানান, শিপইয়ার্ড সড়ক উন্নয়নের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। আইনগত জটিলতা থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণ কাজে বিলম্ব ঘটছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙা হবে। তিনি বলেন, কেসিসির নিজস্ব উদ্যোগে মশা মারার ঔষধ তৈরির কাজ হাতে নেয়া হচ্ছে। অর্থের সাশ্রয়ের পাশাপাশি এতে মশা নিধনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। নগরবাসীর সুবিধার্থে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে নগর ভবনের নিচ তলায় ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ জন কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন সনাক-খুলনার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমা সুলতানা শীলু। স্বাগত বক্তৃতা করেন সনাকের সদস্য অধ্যাপক জাফর ইমাম। কেসিসি’র কাউন্সিলর মোঃ মাহবুব কায়সার, নাগরিক ফোরাম-খুলনার কো-চেয়ারপার্সন শাহিন জামাল পন, মিনা আজিজুর রহমান, আরজুল ইসলাম আরজু, নারী নেত্রী রসু আক্তারসহ খুলনার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।