রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): দক্ষিণাঞ্চলের নার্সারিতে উৎপাদিত গাছের চারা বিক্রির বড় হাট পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা সদর। জেলার স্বরূপকাঠী, নাজিরপুর এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলা বরিশালের বানারীপাড়ার বিভিন্ন নার্সারি থেকে চারা বাজারজাত করার জন্য নিয়ে আসা হয় কাউখালীর হাটে। সপ্তাহে দু’দিন শুক্র ও সোমবার এ হাটে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ফলদ চারা বিক্রি করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে রেইনট্রি, মেহগনি, চাম্বল, জামরুল, আকাশমনি, সেগুন, লম্বনসহ ৩৫ থেকে ৪০ প্রজাতির বনজ চারা। এছাড়া আমড়া, আমলকি, জলপাই, বড়ই, কাঠাল, নারিকেল, সুপারি, আম, জাম, পেয়ারা, ছবেদা, লিচু, জামরুলসহ ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির ফলের চারাও বিক্রি হয়।
বৈশাখ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত এখানে চারা কেনা-বেচা হয়। তবে আষাঢ় থেকে আশ্বিন- এ চার মাস সবচেয়ে বেশি বেচা-কেনা হয়। এ এলাকার নার্সারিতে উৎপাদিত চারা সুপরিচিত। তাই ঢাকা, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে পাইকাররা এসে এখান থেকে গাছের চারা কিনে নিয়ে যায়। এ হাটে মৌসুমে কোটি কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়। কাউখালীর সন্ধ্যা ও চিরাপাড়া নদীর কোল ঘেঁষে কাউখালী বন্দরের এ হাটে বৃটিশ আমল থেকে অল্পবিস্তর করে নার্সারিতে উৎপাদিত চারা বিক্রি শুরু হয়।
বৃক্ষ রোপনে মানুষের উৎসাহ বৃদ্ধি এবং সরকারের সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের কারণে এ অঞ্চলে গড়ে উঠে প্রচুর নার্সারি। আর দিনে দিনে পরিবহণ সুবিধা বাড়তে থাকায় ধীরে ধীরে চারা গাছের বাজার জাতকরণও বাড়তে থাকে। ফলে এখানে গড়ে ওঠে নার্সারিতে উৎপাদিত চারা গাছের বিশাল হাট।
এ হাটে খুলনা থেকে চারা কিনতে আসা শাহারিয়ার জানান, তিনি এ মোকাম থেকে প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির লক্ষাধিক টাকার চারা কিনে নিয়ে যান। তার দেখা দেখি এখন ওই অঞ্চলের অনেকেই এখান থেকে প্রতি মৌসুমে বনজ ও ফলদ চারা কিনে নেন।
নার্সারি ব্যবসায়ী মোঃ ছগির হোসেন খান জানান, তিনি এক বিঘা জমির উপর নার্সারিতে বিভিন্ন প্রজাতির চারা উৎপাদন করে বছরের একটি মৌসুমে ৩-৪ লাখ টাকা আয় করেন। এ অঞ্চলের নার্সারি ব্যবসায়ীরা মনে করেন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে দক্ষিণাঞ্চল গড়ে উঠতে পারে নার্সারিতে চারা উৎপাদনে দেশের বৃহত্তম ও প্রধান কেন্দ্র।