হাকিম বাবুল, শেরপুর: শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পানবর গ্রামের বাইদা পাড়া মসজিদের পাশে এবার এক বন্যহাতি মারা গেছে। শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, পাহাড় থেকে লোকলয়ে নেমে আসা বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে পানবর চৌরাস্তার মোড়ের কাছে শহীদ মিয়া ও নজরুল ইসলাম নামে দুই কৃষকের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত করেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে মৃত হাতিটির মৃত্যুর কারণ ও বয়স জানা যায়নি। তবে স্থানীয়দের হামলার মুখে বন্যহাতিটি মারা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ওই এলাকায় বন্যহাতির দল অবস্থান করছিল বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়ন ও আশপাশের এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা ৩০/৩৫ টির মতো একদল বন্যহাতি তান্ডব চালাচ্ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওই এলাকায় নারীসহ দুইজন বন্যহাতির আক্রমণে নিহত হয়েছেন। প্রতিরাতেই বন্যহাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে ধানের ক্ষেত খেয়ে সাবাড় করাসহ নানা ক্ষয়ক্ষতি করছে। ফের ভোর হতেই হাতির দল পাহাড়ে চলে যাচ্ছে।
লোকজন মশাল জ্বালিয়ে, টিন পিটিয়ে শব্দ করে, জেনারেটরের আলো জ্বালিয়ে হৈ হল্লা-শব্দ করেও হাতির দলকে তাড়াতে পারছেনা। হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে শনিবার সন্ধ্যায় নেমে আসা হাতির দলটিকে স্থানীয় অদিবাসীরা জেনারেটরে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাড়াতে চেষ্টা করে। সেই জেনারেটরের বৈদ্যুতিক শকেই হাতিটি মারা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যেখানে বন্যহাতিটি মারা গেছে তার আশপাশেই বন্যহাতির দল অবস্থান করছে এবং স্থানীয় লেকজন হাতি তাড়াতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কাংশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, একটি বন্যহাতি মারা গিয়েছে। তবে কীভাবে হাতি মারা গেছে, তা বলতে পারছিনা। বন্যহাতির দল লোকালয়েই অবস্থান করছে, এবং সেখানকার লোকজন হাতি তাড়াতে ঘরবাড়ি ছেড়ে মাঠে অবস্থান করছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম রেজা পানবর এলাকায় বন্যহাতি মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হাতি এখনো লোকালয়ে রয়েছে। কীভাবে বন্যহাতিটির মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে কোন কিছু বলা যাচ্ছেনা।
গত এক বছরে ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী সীমান্তে এনিয়ে চারটি বন্যহাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো।