জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে চরম ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিশুরা। যে কোন সময় ভবনের ছাদ ধসে ব্যাপক প্রাণহানীর আশংকা রয়েছে। আর ভবনের ছাদ ঠেকাতে দেওয়া হয়েছে বাঁশের ঠেকনা।
সরেজমিন দেখা গেছে স্কুল ভবনের বিমগুলোতে এতোটাই ফাঁটল ধরেছে যে, সেগুলো যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে। জীবনহানীর আশংকার পরও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের ঠেকনোর নিচে বসে ক্লাস করছে শিশুরা।
শিক্ষকরা বলছেন উপায় না পেয়ে তারা ঝুঁকির মধ্যে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে তাদের চোখ থাকে উপরের দিকে। ক্লাস নেন আর ফাঁকে ফাঁকে উপরের দিকে চেয়ে দেখেন। শিক্ষকরা জানান, তিনটি শে্িরণকক্ষ রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। আর একটি কক্ষে দাপ্তরিক কাজ করা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কমল কান্ত মজুমদার জানান, ১৯৭২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বেসরকারি রেজিষ্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে দীর্ঘদিন শিশুদের পাঠদান চলছিল। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে ১৩৯ জন শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। পাঁচ জন শিক্ষক এখানে নিয়মিত পাঠদান করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়টি সমাপনি পরীক্ষায় ভালো ফল করছে। প্রতিবছরই শতভাগ পাশের পাশাপাশি ২/৩ জন করে ছেলে-মেয়ে বৃত্তির তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে।
এই অবস্থায় তাদের বর্তমানে বড় সমস্যা বিদ্যালয় ভবন। যা এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে ছোট ছোট শিশুদের এই ভবনের নিচে বসিয়ে ক্লাস নিতে তারা ভয় পাচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক কমল কান্ত মজুমদার জানান, দীর্ঘদিন টিনের চালায় প্রতিষ্ঠানটি চলে আসলেও ১৯৯৪ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি ভবন নির্মাণ করে দেয়। সেই ভবনেই তারা পাঠদান করে আসছিলেন।
কিন্তুু গত তিন বছর হলো ভবনের বিমগুলোতে ফাঁটল ধরেছে। ছাদের প্লাষ্টারগুলো ধসে পড়ছে। গোটা ছাদ নষ্ট হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে পানি পড়ে। ভবনের দুইটি বিমে ফাঁটল ধরেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক হারুন-অর রশীদ জানান, বেশ কয়েকবার তারা লিখিতভাবে বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেছেন।
দুই বছর হতে চললো এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলীরা এসে পরীক্ষা করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ আখ্য দিয়েছেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই কাজ চালানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালমা খাতুন জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় এরকম ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি বিদ্যালয় ভবন আছে।
তবে তার মধ্যে চাপালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তারা ইতোমধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন জরুরি বলে অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। আশা করছেন দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।