আব্দুল্লাহ আবু এহসান, মধুপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় আবাদি জমি থেকে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির ড্রেজার মেশিনে অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে আশপাশের ফসলি জমি ধসে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে স্থায়ীভাবে বালু তোলা বন্ধের নির্দেশ দিলেও তিনি এখনো ড্রেজার সরিয়ে নেননি।
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা তাদের জমি অনাবাদি রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।

অভিযুক্ত বালু উত্তোলনকারীর নাম সুরুজ্জামান তারা। তিনি মুশুদ্দি ইউনিয়নের বন্দরচরপাড়া গ্রামের মৃত আছর আলীর ছেলে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ একাধিক দপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেন।
অভিযোগে এলাকাবাসী জানান, উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের কেরামজানী রাস্তার পশ্চিম পাশে ও মুশুদ্দি পূর্বপাড়ার পূর্ব পাশের ২০ একর জমিতে তারা সবজি চাষ করতেন। আশেপাশের জমিতে ধানসহ অন্য ফসলও চাষ হতো। সুরুজ্জামান তারা ড্রেজার মেশিনে খাসজমি থেকে বালু তুলে আশপাশের জমির উপর দিয়ে রাস্তা বানিয়ে বালি বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠান। গত এক বছর বালু উত্তোলনের ফলে ওই সবজি মাঠের মাঝে প্রায় ৯০ ফিট গভীর গর্ত হয়ে আশপাশের প্রায় দুই একর জমি ধসে চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ভূমি ধস আর বালি পরিবহনের ফলে আরো ২০০ হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। এ ক্ষতি অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদও চিঠিতে সুপারিশ করেছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট শামীম আরা রিনি ১৯ সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সুরুজ্জামান তারার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এতে সুরুজ্জামান বালু উত্তোলন বন্ধ করলেও সরেজমিনে গিয়ে ড্রেজার মেশিন আগের অবস্থানেই দেখা গেছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, তিনি আবারও বালু উত্তোলন শুরু করতে পারেন।
সবজি চাষ করে সংসার চালানো অনেক চাষি উপার্জনের উপায় হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকার সাইফুল, সাইদুর, ফারুক, আলামিন, রিনা বেগম জানান, বাকি জমি, রাস্তা, বসতভিটা ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ায় সংশ্লিষ্টরা শঙ্কিত। তাই অবৈধ বালি উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ করার দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। কৃষকরা ক্ষতিপূরণ দাবিও করেছেন।
সুরুজ্জামান তারা জানান, পৈত্রিক জমিতে একটি স্থাপনা নির্মাণ করতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। ওই প্রকল্পে অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি। সুরুজ্জামান অভিযোগ করেন, প্রতিবেশীদের সহযোগিতা পাওয়া তো দূরের কথা বরং বিরোধিতা করে সেটি বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা রিনি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করে তাকে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আবারও বালু তুললে নিয়মিত মামলার মাধ্যমে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।