প্রতিনিধি, বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোল্লাহাটের শালাবাড়িয়া গ্রামে তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে এক হিন্দু নারীর পা দুই টুকরো করে ফেলেছে ধর্ষক। অস্ত্রের মুখে ওই নারীকে ধর্ষণ করতে গেলে তার স্বামী বাধা দেয়। এতে ধর্ষক স্বামীকে কোপাতে উদ্যত হয়। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে পা হারান ওই নারী।
ঘটনার পর ধর্ষক অস্ত্রের মুখে ওই দম্পতিকে ঘরে আটকে রাখে। ১৫ দিন পর বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে পাঠান। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বৃহস্পতিবার রাতে মোল্লাহাট থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
প্রতিবেশীরা জানান, শালাবাড়িয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মাদ মোল্লার ছেলে সোবাহান মোল্লা (২৮) বেশ কিছুদিন ধরে প্রতিবেশী সংখ্যালঘু এক পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে ওই পরিবারের এক নারীকে (৩২) একাধিকবার ধর্ষণ করে। জীবনের ভয়ে ঘটনা গোপন রেখে ধর্ষক সোবাহানকে কৌশলে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন ওই নারী।
২৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সোবাহান মোল্লা বাড়িতে গিয়ে ওই নারীকে তলোয়ার দেখিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলে। দরজা না খুললে সে সকলকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়। ভীত-সন্ত্রস্ত নারী ঘরের দরজা খুলে দিতে বাধ্য হন।
সোবাহান ওই নারীকে ধর্ষণ করতে গেলে তার স্বামী বাধা দেন। তখন সোবাহান স্বামীকে কোপ দেওয়ার জন্য ধাওয়া করলে স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে তলোয়ারের কোপে ওই নারীর ডান পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য সোবাহান ওই নারীকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয় এবং অস্ত্রের মুখে তাদের ঘরে বন্দি করে রাখে। পরে এক হাতুড়ে চিকিৎসককে ডেকে বাড়িতে এনে আহতের পা সেলাই করিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেয়।
বুধবার চিৎকার শুনে প্রতিবেশী মনির মুন্সিসহ কয়েকজন ওই বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। ওই সময় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ব্যান্ডেজ খুলে দেখেন পায়ে পচন ধরেছে। পরদিন তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উদ্ধারকারীদের একজন উপজেলা মটর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির মুন্সি বলেন, সোবাহান মোল্লা এলাকার আতঙ্ক, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। তার ভয়ে এলাকার নিরীহ পরিবারের কলেজপড়ুয়া মেয়েরা বাড়িতে থাকতে পারে না।