প্রতিনিধি, বাগেরহাট: পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দুবলার চরসহ ১৪টি চরে শনিবার আশ্বিনের পূর্ণিমা থেকে শুঁটকি মৌসুম শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ খাত থেকে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই কোটি টাকা। মার্চ মাস পর্যন্ত এসব চরে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত চলবে ।
সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি মৌসুমকে ঘিরে এবছর ১০ থেকে ১৫ হাজার জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী এসব এলাকায় জড়ো হচ্ছেন। সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহেরআলীর চর, আলোরকোল, অফিসকিল্লা, মাঝেরকিল্লা, শেলার চর, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয়া, বড় আমবাড়িয়া, মানিকখালী, কবরখালী, চাপড়াখালীর চর, কোকিলমনি ও হলদাখালী চরে তারা অবস্থান করবেন।
এ পল্লীতে জেলেদের মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের ওপর ভিত্তি করেই সুন্দরবন বিভাগের রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। গত বছর পূর্ব বনবিভাগ শুঁটকি মৌসুমে ৯ হাজার ৮৩৮ জন জেলের কাছ থেকে ১ কোটি ৭০ লক্ষ ৮৮৫ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম জানান, এ বছর শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য দুবলারচরে ৮০০ বসতঘর ও ৬০টি ডিপো নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এবার রাজস্ব ধরা হয়েছে দুই কোটি টাকা। এ বছর ৩০ হাজার কুইন্টাল (প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন) শুঁটকি উৎপাদন হবে ।পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ কর্মকর্তা জানান, এ বছর পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে শুঁটকি আহরণকারী জেলে ও বহরদাররা পাস-পারমিট নিয়ে শুক্রবার দুবলারচরের শুঁটকি পল্লীর উদ্যেশে যাত্রা করেছে। সুন্দরবন অভ্যান্তরে ১০টি মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র নিয়ে দুবলা জেলেপল্লী।
এখানে জেলেরা শুঁটকি তৈরির জন্য অস্থায়ী ঘর ও মাচা তৈরি করেন। সমুদ্রে মাছ শিকার করে তা বাছাই শেষে শুঁটকি করেন।
এবারও জেলেরা সুন্দরবনের কোনো গাছপালা ব্যবহার করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা দিয়েছে বন বিভাগ। শুঁটকি মৌসুমকে ঘিরে জেলেদের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগের পাশাপাশি কোস্টগার্ড, র্যাব ও পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জেলে-বহরদাররা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দস্যু আতঙ্ক কম। সুন্দরবনের কয়েকটি বনদস্যু দল স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করায় এবারের শুঁটকি মৌসুমে তারা উৎকন্ঠাহীন স্বস্তিতে কাজ করতে পারবেন।