সোনালিতে সোনার দিন

স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): তার খামারে এখন বিভিন্ন জাতের ১৯ হাজার মুরগি রয়েছে। পনের বছর আগে মাত্র আড়াইশ’ লেয়ার বা ডিম উৎপাদনকারী মুরগি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন এস এম রবিউল ইসলাম। এখন তিনি এলাকার সফল খামারি হিসেবে পরিচিত। সোনালি জাতের মুরগির একটি ব্রিডার ফার্ম তার জন্য বেশ লাভ বয়ে এনেছে। বাচ্চা উৎপাদনের জন্য তার খামার থেকে সোনালি মুরগির ডিম সংগ্রহ করে বিভিন্ন হ্যাচারি। আর খামার উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের ভাগ্য বদলে ফেলেছেন রবিউল।

পাবনার ঈশ্বরদীর ভাড়ইমারী সরদারপাড়া গ্রামে রবিউলের বাড়ি। তার খামারের নাম হাজি নকিম উদ্দিন পোল্ট্রি খামার। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে পোল্ট্রি, গবাদিপশু ও মাছ চাষের উপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০০০ সালে বাড়িতে ছোট একটি মুরগি খামার করেন। সেই খামারে এখন ১৯ হাজার মুরগি। রবিউল এলাকার বেকার যুবকদেরকে সোনালি মুরগি পালনে উৎসাহিত করছেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।

ishwardi-151016-2
রবিউল ইসলামের খামার।

এক বছর ধরে খামারে সোনালি মুরগির ডিম উৎপাদন করছেন। রবিউল জানান, সোনালি মুরগির ডিম বিক্রিতে লাভ বেশি। এখন প্রতিদিন এক হাজারের বেশি সোনালি মুরগির ডিম বিক্রি করেন তিনি। প্রতিটি ডিম ১৫ হতে ১৬ টাকা দরে বিভিন্ন হ্যাচারি কিনে নিয়ে যায়।

খামারের লাভ থেকে কয়েক বিঘা জমি কিনেছেন রবিউল। জানালেন, তিনি এলাকার বেকার যুবকদের নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এছাড়া একটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করেছেন তিনি, মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করে এটি চালান। নিজের পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়েও  প্রতিবেশী আরো নয়টি পরিবারে বায়োগ্যাস সরবরাহ হচ্ছে তার প্ল্যান্ট থেকে।

ভবিষ্যতে একটি হ্যাচারি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে তার। বললেন, সহজ শর্তে কোনো ব্যাংক কিংবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঋণ পেলে হ্যাচারি স্থাপনের ম্যাধ্যমে খামারটি আরো সম্প্রসারিত করার ইচ্ছে আছে তার।

রবিউল বললেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে মুরগি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। শিক্ষিত বেকার যুবকরা এরকম উদ্যোগে যুক্ত হতে পারে।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফা জামান বলেন, রবিউল ইসলাম সোনালি মুরগি পালন করে ঈশ্বরদীর একজন মডেল খামারি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বাজারে অন্য জাতের মুরগির ডিম প্রতিটি ৬ থেকে ৭ টাকা দরে বিক্রি হলেও সোনালি মুরগির প্রতিটি ডিম ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রি হয়। এখন হ্যাচারির মালিকেরা রবিউলের খামারের ডিম কিনে নিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করছেন।

এলাকার অনেক যুবক এখন সোনালি মুরগি পালন শুরু করেছেন। নিয়ম মেনে রবিউল খামারের কার্যক্রম পরিচালনা করলে আরো বেশি লাভবান হবেন বলে মনে করেন মোস্তফা জামান।

 

Save

Save

Save

Save

Save

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.