জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: জঙ্গি ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে ঝিনাইদহকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। ঝিনাইদহ জেলা শহরসহ উপজেলা সদর ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা।
ইতিমধ্যে ঝিনাইদহ শহরে একশ’র বেশি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কাজ চলছে অন্য উপজেলাগুলোতেও। বাদ পড়েনি মন্দির-গির্জাও।
এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় চার জন টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে একজন মন্দিরের পুরোহিত ও একজন সেবায়েত হত্যার পর মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়।
বিষয়টি বিবেচনায় এনে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য ব্যবসায়ী, মন্দির, গির্জা কমিটি, ব্যাংক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মালিকদের সিসি ক্যামেরা বসাতে উদ্বুদ্ধ করে।
কালীগঞ্জ কালী মন্দিরের পুরোহিত বলেন, ‘গত কয়েকটি ঘটনার পর থেকে আমরা মন্দিরের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পূজার্চনা করতাম। এখন মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পর কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। ভালো মতো পূজা করতে পারছি। কোনো সমস্যা নেই।’
কালীগঞ্জের কলেজপাড়া এজি চার্চের পাদ্রী রেভারেন্ট জন তালুকদার বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা লাগানোর আগে এখানে কিছু দুষ্টু প্রকৃতির লোক আসা যাওয়া করতো। সিসি ক্যামেরা লাগানোর পর থেকে তারা আর আসে না। ভালো মতো নির্ভয়ে উপাসনা করতে পারছি।’
ঝিনাইদহ শহরের গীতাঞ্জলী সড়কের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী সাংবাদিককে বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা লাগানোর ফলে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা বেড়েছে। অপরাধ সংগঠিত হলেও তাদের সহজেই চিহ্নিত করা যাবে।’
ঝিনাইদহ শহরের বিলাসবহুল আবাসিক হোটেল রেডিয়েশনের চেয়ারম্যান এম এ জলিল বলেন, ‘আমি হোটেল ব্যবসা করেছি। দেশ ও বিদেশ থেকে নানা প্রকৃতির গেস্ট আমাদের হোটেলে অবস্থান করেন। শহরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর ফলে ব্যবসায়ে নিরাপত্তা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে স্বস্তি।’
ভারতের চব্বিশ পরগনা থেকে আসা ব্যবসায়ী আশিষ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘ব্যবসায়ের কাজে আমাকে প্রায়ই ঝিনাইদহ শহরে অবস্থান করতে হয়। ঝিনাইদহ পুলিশ প্রশাসন ও ব্যবসায়ীরা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
ঝিনাইদহ জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম মন্টু বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নাশকতাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড দূরে রাখতে প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিককে বলেন, জেলার নিরাপত্তা জোরদার ও জেলা থেকে অপরাধ কমিয়ে আনার জন্য এ কার্যক্রম সুফল বয়ে আনবে। ইতোমধ্যে আমরা শহরের বিভিন্ন স্থানে ১শ’ টিরও বেশি ক্যামেরা লাগিয়েছি।
এছাড়াও বাকি ৫টি থানা পর্যায়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো শুরু হয়েছে। সিসি ক্যামেরা লাগানোর ফলে ঝিনাইদহ থেকে অনেক অপরাধমূলক কর্মকান্ড কমে গেছে।