কাউখালীর চিরাপাড়া নদীতে বিষ ঢেলে মাছ চুরি

রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): কাউখালীর চিরাপাড়া নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করছে একদল দুষ্কৃতকারী। রবিবার ও সোমবার রাতে বিষ প্রয়োগ করে এরা কয়েক লাখ টাকার মাছ চুরি করে নিয়ে যায়।

ওই দিন ভোরে  লোকজন নদীর সর্বত্র মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার কয়েক শ’ নারী-পুরুষ বিভিন্ন প্রকার জাল, মশারি, গামছা নিয়ে মাছ ধরার জন্য নদীতে  নেমে পড়ে।

গত কয়েক বছর ধরে এভাবে বিষ ঢেলে মাছ চুরির ঘটনা ঘটলেও এটা বন্ধে প্রশাসনিক কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বিষ ঢেলে মাছ শিকার করায় প্রকৃত জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেই সঙ্গে পানি দূষণও ঘটছে। এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে এভাবে মাছ নিধন বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

গত দু’দিন সকালে চিরাপাড়া নদীর নৈকাঠি, বড় বিড়ালজুড়ি, ছোট বিড়ালজুড়ি, কাঠালিয়া এলাকায় মরা মাছ ভেসে থাকতে  দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, চিরাপাড়া নদীর কাঠালিয়া গ্রামের প্রান্ত থেকে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের নৈকাঠি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় বিষ প্রয়োগ করা হয়। চিংড়ি, টেংরা, বোয়াল, কই, শিং, পুঁটি, মলা, বাইনসহ বিভিন্ন  প্রজাতির মাছ ধরা হয়েছে। রবি ও সোমবার মধ্যরাতে দুষ্কৃতকারীরা এভাবে মাছ ধরে নিয়ে যায়।

সকালে নদীতে কিছু মরা মাছ ভেসে উঠলে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় দুষ্কৃতকারীরা  প্রায় ৭/৮ বছর ধরে কার্তিক মাসের শেষে অথবা অগ্রহায়ণ মাসের  প্রথম দিকে উপজেলার কচুয়াকাঠি, জোলাগাতী, নিলতী,গারতা, সোনাকুর খাল, চিরাপাড়া নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

কাঠালিয়া গ্রামের চুন্নু বলেন, বছরের পর বছর ধরে একটি নির্দিষ্ট সময় নদীতে বিষ দিয়ে এভাবে মাছ চুরি করায় এলাকাবাসীর আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রবিবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা প্রায় কয়েক লাখ টাকার মাছ ধরে নিয়ে  গেছে।

কাউখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাফিজুর রহমান শাহীন জানান, দুষ্কৃতকারীরা এ কাজটি প্রতি বছর করে। এভাবে মাছ নিধনের কারণে মাছ শূন্য হবে চিরাপাড়া নদী। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, চিরাপাড়া নদীতে বিষ দিয়ে মাছ মারার কথা শুনছি। বিষ দিলে মাছের সঙ্গে সব প্রজাতির জলজ প্রাণীই মারা যায়। এটা জীববৈচিত্র্যের জন্য খুবই মারাত্মক।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  লাবনী চাকমা  জানান, কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.