একেএম কামাল উদ্দিন টগর, আত্রাই (নওগাঁ): নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার এক সময়ের সার-মুদি ব্যবস্যায়ী মো. মুনছুর রহমান (কান্দুর) মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদপত্রের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। তবে কীভাবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হলেন তা নিয়ে আত্রাই উপজেলার জনসাধারণের মধ্যেও নানা আলোচনা রয়েছে।
তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমনটা জানা নেই আত্রাই এলাকাবাসীর। তবে তিনি মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সাটিফিকেট বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়ে ভাতা উত্তোলন করছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে ও নওগাঁ জেলা প্রশাসক বরাবর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছামাদ ও মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান লিখিত অভিযোগ করলে জেলা প্রশাসক আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
নির্দেশ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. আব্দুল মমিনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি দীর্ঘ একমাস সরেজমিনে পরিদর্শন ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে এবং এলাকাবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছেন মুনছুর রহমান (কান্দুর) মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। সে নিজে তদন্ত টিমের সামনে উপস্থিত হয়ে লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দিতে স্বীকার করে সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেনি।
পরিপত্র অনুযায়ী এলাকাবাসী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য প্রমানে মো. মুনছুর রহমান (কান্দুর) ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন বলে তদন্ত টিমের টিম লিডার ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুল মমিন, উপজেলা সহকারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও তদন্ত টিমের সদস্য মো. আব্দুল মালেক খাঁন জানান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে মোঃ মুনছুর রহমানের (কান্দুর) কাছে সঠিক কাগজপত্র চাওয়া হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত সনদপত্র ছাড়া অন্য কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই। এভাবে আত্রাইয়ে আরো বেশ কয়েকজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছে। কিন্তু তারা এখনো পরিপত্র অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে নানা কৌশলে তারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় গ্রেজেটে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেজেটপ্রাপ্ত হয়ে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করে সরকারি ভাতা গ্রহণ করে আসছেন। বর্তমানে সরকার এ সব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোখলেছুর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক নওগাঁর নির্দেশ মোতাবেক একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নিকট পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া কোন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।