কাউখালী শ্রীগুরু সংঘ কেন্দ্রীয় আশ্রমে ৫ দিনব্যাপী রাস উৎসব শুরু

রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): পিরোজপুর জেলার কাউখালীতে শ্রীগুরু সংঘ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আশ্রমের পাঁচ দিনব্যাপী এতিহ্যবাহী রাস উৎসব মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। শ্রীগুরু সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ধর্মগুরু শ্রীশ্রীমদ্ দূর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেবের ১২৫ তম আবির্ভাব তিথি রাস পূর্ণিমায় প্রতিবছর এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ দিনের এ উৎসবকে ঘিরে দেশ ও বিদেশের লক্ষাধিক পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটবে। ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকা থেকেও ভক্তবৃন্দ এ অনুষ্ঠানে সমবেত হবেন। এ উপলক্ষে কাউখালী জনপদ এখন মুখরিত।

kawkhali-15-11-pk-1
কাউখালী শ্রীগুরু সংঘ কেন্দ্রীয় আশ্রমে ৫ দিনব্যাপী রাস উৎসব উপলক্ষে শোভাযাত্রা।

শ্রীগুরু সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি স্বামী জগন্নাথানন্দ সরস্বতী  মঙ্গলবার সকালে আশ্রমে সংঘ পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। পরে “সত্য, সেবা, নীতি, ধর্ম-জীবনের চারি কর্ম”- এ বক্তব্যকে সামনে রেখে সংঘের সাধারণ সম্পাদক রনঞ্জয় কৃষ্ণ দত্ত, কোষাধ্যক্ষ বিপুল কৃষ্ণ ঘোষ ও শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহবায়ক মানিক করের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিঠু ও কাউখালী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ মিল্টন।

উৎসবের তথ্য ও প্রচার উপ-কমিটির আহবায়ক সুব্রত রায় জানান, বিশ্ব চরাচরের দু:খবিমোচন, অধর্মের গ্লানি থেকে রক্ষা ও ধর্ম সংস্থাপণার্থে বিশ্ব শান্তি কামনায় পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবে ২৪ প্রহরব্যাপী তারকব্রহ্ম মহানাম সংকীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হবে।

উৎসব উপলক্ষে আশ্রম প্রাঙ্গণে বিশাল এলাকা জুড়ে বসেছে রাসমেলা। নাগরদোলাসহ রকমারি জিনিসের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা। পাহাড়ী কাঠের নকশায় গড়া আকর্ষণীয় ফার্নিচারসহ দূর দূরান্ত থেকে দোকানীরা এসেছে এই মেলায়। শীতের গরম কাপড়, শিশুদের বিনোদনেরও অনেক খেলনা সামগ্রীতে জমে উঠেছে এ আনন্দমেলা।
আশ্রমের প্রচার সম্পাদক ভক্ত কর্মকার জানান, জাতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এ আশ্রমের সেবামূলক অনেক কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে মন্দির ভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, দাতব্য চিকিৎসালয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা বিনামূল্যে বিশেষ চক্ষু চিকিৎসা শিবির পরিচালনা। সুরেন্দ্র নাথ দে স্মৃতি পাঠাগার ও দৈনিক দরিদ্র নারায়ণ সেবা অন্যতম।
এ ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মংগল আরতি, শ্রীমদ্ভাগবদ গীতা ও গুরুগীতা পাঠ, বস্ত্র বিতরণ, সরকারি হাসপাতালে দু:স্থ রোগীদের মধ্যে ফল বিতরণ, সান্ধ্যকালীন প্রার্থনা ও ধর্ম সভা ইত্যাদি। ১৯ নভেম্বর সমাপনী দিনের মহোৎসবে কুঞ্জভঙ্গ, নগরকীর্ত্তন ও পরিক্রমা এবং গুরুপূজা শেষে মহাপ্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.