রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় অনিয়মের কারণে ১১ হাজার ৩৩২টি ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের কার্ড বাতিল করা হয়েছে এবং ৩টি মামলা দায়ের ও ৫ জন ডিলার পরিবর্তন করা হয়েছে।
দিনাজপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এসএম কায়সার আলী জানান, হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের কার্যক্রম ৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। জেলার ১৩টি উপজেলার ১০২টি ইউনিয়নে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২৮৮ জন হতদরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল দেয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকাভুক্তির সময় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা স্বজনপ্রীতি অনিয়ম ও দুর্নীতি করে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম হতদরিদ্রদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে তা নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ উঠে। এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রোববার পর্যন্ত ১১ হাজার ৩৩২টি ১০ টাকা কেজি দওে চাল বিতরণের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। স্বচ্ছল ব্যক্তিদের কার্ড বাতিল করে সেখানে প্রকৃত হতদরিদ্রদের নাম তালিকাভুক্তি করা হচ্ছে।
সূত্রটি জানায়, জেলার ১৩টি উপজেলায় চাল বিক্রির জন্য ২৩৪ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ৫ জনের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ২ জন এবং খানাসামা, বীরগঞ্জ ও বিরলে ১ জন করে মোট ৫ জন ডিলারকে এ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, অনিয়মের আশ্রয় নেয়ায় ডিলারসহ ১০ টাকা কেজি চাল কেনার অভিযোগে দুদক আইনে ৭ জনের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা মামলা ৩টি তদন্ত করছেন। দিনাজপুর জেলায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য ৫ মাসের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২১ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত চাল বিক্রির পরিমাণ ১০ হাজার ৬৩৯ মেট্রিক টন।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানান, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী জেলায় অস্বচ্ছল ও হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে এ তালিকাভুক্তি করতে যে অনিয়ম করেছিল তা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ স্থানীয় জনসাধারণের সাথে যাচাই-বাছাই করে সঠিক তালিকা প্রস্তুত করেছে। সর্বশেষ স্বচ্ছ তালিকার ভিত্তিতে চাল বিক্রির কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজে কোন ধরনের অনিয়ম প্রশয় দেয়া হবে না। অভিযোগ পাওয়া গেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।