রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুর সদর হাসপাতালে জনবল, চিকিৎসক সংকট এবং রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
দিনাজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টা বেজে গেলেও হাসপাতালের আউটডোরে কোন ডাক্তার রোগী দেখেন না। ভুক্তভোগী রোগীরা হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখানোর জন্য টিকেট কেটে ডাক্তারের চেম্বারে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র। এসব বিষয় দেখার কোন অভিভাবক নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ৩৫জন চিকিৎসকের স্থলে মাত্র ১৭ জন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা চলছে। বাইরে থেকে মেডিকেল অফিসারদের ধার করে এনে চালানো হচেছ বর্হিবিভাগ। এ অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে অচল হয়ে পড়েছে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা।
সূত্রটি জানায়, ১৯৭৬ সালে হাসপাতালটি ১শ’ শয্যার জনবল নিয়ে সদর হাসপাতাল হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ১৯৯৮ সালে একই জনবল দিয়েই ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২৫০ শষ্যার হাসপাতালটি এখন চলছে ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ ৫টি থাকলেও কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ১০ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও সব কয়টি শুন্য।
আগত রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা বাইরে করতে হয়। হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাব ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবল না থাকায় কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা রোগীরা করতে পারে না। ফলে বাধ্য হয়ে বাহিরের ক্লিনিক থেকে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। ডাক্তার ও জনবল হাসপাতালে উপস্থিত না থাকার বিষয়টি এখন প্রতিদিনের ঘটনা।
এদিকে সদর হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয়। রোগীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সকালের নাস্তায় রুটিন অনুযায়ী যে রুটি ও কলা দেয়ার কথা তা নিম্নমানের, রোগীদের খাবার উপযোগী নয়। দুপুরে ও রাতে মোটা চালের ভাত ও নিম্নমানের ডাল তরকারী দেয়া হয়। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নামমাত্র মাছ ও মাংস সরবরাহ হয়। এ বিষয়ে হাসপাতালের কোন কর্মকর্তার তদারকি নেই বললেই চলে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা হলে তারা কোন কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সদর হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, চিকিৎসক ও জনবল এবং হাসপাতালের এক্সরে মেশিনসহ নানা সমস্যা রয়েছে। অচিরেই এসব সমস্যা সমাধান করা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এই হাসপাতাল থেকে প্রতিমাসে গড়ে ১৮ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। অথচ পুরো জেলায় বসবাস করে ৩২ লাখেরও অধিক মানুষ।