রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুরের ডিবি পুলিশ মঙ্গলবার রাতে শহর থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পিতা। অন্যদিকে ডিবি পুলিশ বলছে, দুই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার আসামি হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেসিও ময়েজউদ্দীন আহমেদ লিখিত অভিযোগে জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় ডিবির দিনাজপুরের ওসি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল শহরের বড়বন্দর নতুনপাড়ায় তার বাসায় এসে ছেলে রাফায়েতুল ইসলামকে (৩০) মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ডিবি কোনো ধরনের আটকের কাগজ দেখাতে পারেনি। ঘটনার পরপর ময়েজউদ্দীন কোতয়ালী থানা, র্যাব ১৩, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন এবং ডিবি অফিসে যোগাযোগ করলে বলা হয় এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা। পরে ডিবির স্থানীয় ওসি মনিরুজ্জামানের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি অশোভন আচরণ করে বলেন, টাকা আত্মসাৎ করায় রাফায়েতুল ইসলামকে তুলে আনা হয়েছে। ছেলে এখন কোথায় আছে জানতে চাইলে ডিবির ওসি মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ময়েজউদ্দীন বলেন, তিনি ৩০ অক্টোবর দিনাজপুরের সদর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ব্যবসায়ী শামীম কবির, মঞ্জুর-এ এলাহী মুকুল এবং রেজাউল করিম মিলুর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩৪২, ৩২৩, ৩৮৫, ৩৮৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক দিনাজপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন কর্মকর্তাকে ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারির পূর্বে লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।
মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা ময়েজউদ্দীন আহমেদ অভিযোগ করেন, শহরের মৌলভী ব্রাদার্স ও গ্রামীণ ফোনের পরিবেশক শামীম কবিরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তার ছেলে রাফায়েতুল লগ ইন অফিসার হিসেবে পাঁচ বছর ধরে চাকুরি করে আসছিলেন। ৮ অক্টোবর শামীম কবির ও আসামিরা তাকে অবৈধভাবে অফিস কক্ষে আটক করে রেখেছেন মর্মে মোবাইলে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাটি কোতয়ালী থানা পুলিশকে জানালে ১০ অক্টোবর রাত ১০টায় পুলিশ আমার ছেলে রাফায়েতকে উদ্ধার করলে তাকে আমি বাসায় নিয়ে আসি। আটককালে রাফায়েতকে হত্যার হুমকি দিয়ে ১০০ টাকার ৩টি স্ট্যাম্পে ফাঁকা জায়গায় সই করে নেয়। স্ট্যাম্পে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের উল্লেখ করে ভিডিও ও বক্তব্য রেকর্ড করা হয়।
অপরদিকে ডিবির ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, দুই কোটি টাকা আত্মসাতের নিয়মিত মামলার আসামি হিসেবে রাফায়েতুলকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বজলুর রশিদ গ্রেফতার করেছেন। বুধবার আদালতে সোপর্দ করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে এবং আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানি হবে বলে ডিবির ওসি জানান।