দিনাজপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে গৃহবধূকে মারধোর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ, মিমাংসার জন্য চাপ

রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক গৃহবধূকে মারধোর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে।  ওই ঘটনায় মহিলা থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। বাধ্য হয়েই আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। তবে পুলিশ আসামিদেরকে গ্রেফতার না করে মিমাংসার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

দিনাজপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে গৃহবধূকে মারধোর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ ।

রোববার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন র্নিযাতনের শিকার দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং উপশহর এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তার ৪ শতাংশ জমি নিয়ে এলাকার কয়েকজনের সাথে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় অবৈধভাবে জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগে গত ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এই মামলার জের ধরে দীর্ঘদিন ধরে আসামিরা তাকে হুমকী-ধামকি দিয়ে আসছিল। গত ৯ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে জাকির হোসেন, আব্দুল আজিজের ছেলে মতিয়ার রহমান, মতিয়াার রহমমানের ছেলে মুরসালিন ও পারভেজ, আব্দুল মালেকের ছেলে জনি ও জুয়েল, হামিদুর রহমানের ছেলে লিয়ন, মফিজজ উদ্দিনের ছেলে হামিদুর রহমান, মফিজ উদ্দিন্রে ছেলে হাফিজুর রহমান, জাকির হোসেনর স্ত্রী অনুমিক ও মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মাহফুজা বেগম তাকে বাড়ির সামনে একা পেয়ে মারধোর শুরু করে।

এই মারধোরে ফরিদা ইসলামের বাম হাতে রড দিয়ে বাড়ি মারায় হাত ভেঙ্গে যায়। এ সময় আসামিরা তার মাথায় আঘাত করে ও টেনে হেঁচরে কাপড়-চোপড় খুলে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ঘটনায়। মারধোরের সময় আসামিরা ফরিদা ইসলামের গলায় পরিহিত ৮ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়, যার আনুমানিক মূল্য ২০ হাজার টাকা। এ সময় এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে রুবেল ও জিমাল সরকারের স্ত্রী হাজেরা বেওয়া এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদেরকেও মারধোর করে এবং রুবেলের পকেট থেকে ১০ হাজার টাকা এবং সাড়ে ৮ হাজার টাকার মূল্যের একটি ওয়ালটন মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় বাদি ফরিদা ইসলামকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এ ঘটনায় তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাদীনী ফরিদা ইসলাম অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় এক আসামি আটক থাকলেও মামলা দায়ের করার পর থেকেই বাকী আসামিরা তাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকী-ধামকি দিচ্ছেন। বিষয়টি পুলিশকে বারবার অবহিত করা হলেও পুলিশ আসামিদেরকে গ্রেফতার না করে মিমাংসার চাপ দিচ্ছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফরিদা ইসলামের মা আসিয়া বেগম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.