প্রতিনিধি, বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলার একটি বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে সাবেক স্বামী এক তরুণীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
এ সময় মেয়েটির বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসী দল। হামলাকারীরা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়।
শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে শরণখোলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও তার ছেলে সজিব আকনের নেতৃত্বে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুলু গাজীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ফাতেমা-তুজ-জোহরা শান্তা (২০) নামের অনার্স পড়ুয়া ওই তরুণীকে অপহরণ করে।
শান্তা পিরোজপুর মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
শনিবার বিকেল পর্যন্ত শান্তাকে পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই ট্রলার ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।
গুরুতর আহত অবস্থায় শান্তার পিতা দুলু গাজী (৫৫) এবং মা আঞ্জুমান আরা বেগমকে (৪৫) শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সচেতন নাগরিক কমিটির ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শরণখোলা উপজেলার খাদা গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সবুর আকনের ছেলে সজিব আকন (২৫) এর সাথে ২০১৫ সালে শান্তার বিয়ে হয়।
কিছুদিন পর তাদের দাম্পত্য বিবাদ শুরু হলে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে শান্তা সজিবকে তালাক দেয়।
পরবর্তীতে উভয় পরিবার একে অপরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে।
শুক্রবার গভীর রাতে সজিব ও তার পিতা সবুর আকনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনে একদল লোক দুলু গাজীর বাড়ি ঘেরাও করে এবং পুলিশ পরিচয় দিয়ে দরজা খুলতে বাধ্য করে। সজিবসহ ৫-৬ জন মুখোশধারী ঘরে ঢুকে দুলু গাজী (৫৫) ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমকে (৪৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ঘরে থাকা নগদ তিন লাখ টাকা, ১৫/১৬ ভরি স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুটে নেওয়ার পর অস্ত্রের মুখে শান্তাকে তুলে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
পরে প্রতিবেশীরা আহতদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সবুর আকনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চিকিৎসাধীন দুলু গাজী জানান, বিয়ের পর থেকে শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী শান্তার ওপর নির্যাতন শুরু করে। এজন্য শান্তা তার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য হয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষে পাল্টা-পাল্টি মামলা হয়। সজিবদের দায়ের করা দুটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে আরো বলেন, ঢাকা থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা শান্তাকে গুম অথবা মেরে ফেলতে পারে। তিনি দ্রুত মেয়েকে উদ্ধারের অনুরোধ করেন।
শরণখোলা থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, শান্তাকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রলার ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামান ডালিম ও শাহাব উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে।