হাকিম বাবুল, শেরপুর: নালিতাবাড়ী উপজেলার নিজপাড়ায় উচ্চফলনশীল বিনা সরিষার তিনটি জাত ও সরিষার সঙ্গে মৌ চাষ নিয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের সহায়তায় শনিবার বিনা নালিতাবাড়ী উপকেন্দ্র এ মাঠ দিবসের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে এ চাষপদ্ধতি সম্পর্কে কৃষক ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়।
মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের (সিসিটিএফ) পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ড. ফজলে রাব্বি সাদিক আহমেদ প্রধান অতিথি ও বিনা ময়মনসিংহের পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) ড. মো. আজগর আলী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মাঝে সিসিটিএফ প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, নালিতাবাড়ী ইউএনও তরফদার সোহেল রহমান, বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসরিন আখতার, কৃষক নেতা রেজাউল করিম, কৃষক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এলাকার শতাধিক কৃষক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
নালিতাবাড়ী বিনা উপকেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে পৌর এলাকার নিজপাড়া গ্রামে ‘বিনা প্রযুক্তি পল্লী’ এলাকায় প্রায় ১০ একর জমিতে কৃষকরা আমন মৌসুমে বিনাধান-৭, ১১ এবং ১৭ চাষ করেন। আমন কেটে এবার কৃষকরা বিনা উদ্ভাবিত বিনা সরিষা-৪, ৯ ও ১০ আবাদ করেন। সরিষার সাথে মৌ-বাক্স স্থাপন করে মৌ চাষ করা হয়। মাত্র ৭০-৮০ দিনে সরিষা তুলে এই জমিতেই কৃষকরা বোরো মৌসুমে বিনাধান-১০ ও ১৪ আবাদ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, আগে এসব জমিতে তারা কবল আমন ও বোরো আবাদ করলেও এবার বিনার প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগের দুই ফসলের জায়গায় এখন তিনটি ফসল (আমন-সরিষা-বোরো) পাচ্ছেন। এতে তারা অধিক লাভবান হওয়ার আশা করছেন। বিনা সরিষার ফলন একরপ্রতি প্রায় ১৭ মণ। যা স্থানীয় টড়ি জাতের সরিষার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তাছাড়া বিনা সরিষায় তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২ ভাগ। অন্যদিকে টড়ি যাতের সরিষায় তেলের পরিমাণ মাত্র ৩০ ভাগ। তাছাড়া সরিষার সাথে মৌ চাষে পরাগায়নে মৌমাছি সহায়তা করায় সরিষার ফলন শতকরা ২০ ভাগ বৃদ্ধি পায় বলে কৃষি বিজ্ঞানীরা জানান।