মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): অস্ত্র ও গুলিসহ সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ নোয়া বাহিনীর ১২ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন।
শনিবার দুপুরে কুয়াকাটা রাখাইন মার্কেট মাঠে র্যাব-৮ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারা প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র্মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

র্যাব-৮ বরিশাল ক্যাম্পের অধিনায়ক মো. আনোয়ার উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীসহ বহু মানুষ উপস্থিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জলদস্যুরা ৭টি বিদেশি একনলা বন্দুক, ৮টি বিদেশি দোনলা বন্দুক, ২টি বিদেশি এয়ার রাইফেল, ৩টি ওয়ান শুটার গান, ২টি বিদেশি রাইফেল এবং ৩টি বিদেশি কাটা বন্দুকসহ ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ১০৫ রাউন্ড তাজা গুলি জমা দেয়।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে দুর্বল হয়ে জলদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করছে। এখনও যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান তারা আত্মসমর্পণ করুন। মন্ত্রী আরো বলেন, জলদস্যুদের যারা আশ্রয় দিচ্ছেন এবং সহযোগিতা করছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে নোয়া বাহিনীর প্রধান বাকী বিল্লাহ ওরফে নোয়া জানান, কুপরামর্শে অন্ধকার জগতে গিয়েছিলেন। দস্যুতা করে তেমন কিছুই করতে পারেননি। কামিয়েছেন শুধুই বদনাম। ওই জীবনের কোন নিশ্চয়তা ছিল না। অনিশ্চিত জীবন ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনের আশায় সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি।
আত্মসমর্পনকারীরা হলেন নোয়া বাহিনীর প্রধান বাকি বিল্লাহ মিয়া ওরফে নোয়া (৩৭), মনিরুল শেখ (৩৮) , মানজুর মোল্লা ওরফে রাঙ্গা (৪২), মুক্ত শেখ (৩৭), তরিকুল শেখ (৬০), আকবর শেখ (৪২), কিবরিয়া মোড়ল (৪০), জাহাঙ্গীর শেখ ওরফে মেজ ভাই (৪৮), আল আমিন সিকদার (৫০), ইউনুচ শেখ ওরফে দুলাল ঠাকুর (৪০), মিলাদুল মোল্লা ওরফে কালু ডানকাত (২৮), মোশারফ হোসেন (৩৭)। তাদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোংলা ও রামপালের বিভিন্ন এলাকায়।
র্যাব জানায়, নোয়া বাহিনীর সদস্যরা দুর্ধর্ষ অপরাধী। সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন থানায় তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। র্যাব-৮ এর অভিযানের কারণে নোয়া বাহিনী দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
র্যাবের দেওয়া তথ্য মতে, নোয়া বাহিনী সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে সক্রিয় ছিল। ইতোপূর্বে আত্মসমর্পণ করা ৬০ জন জলদস্যুকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। তারা এখন জামিনে রয়েছেন।