শেষ পৌষে সাতক্ষীরায় জেঁকে বসেছে শীত, দরিদ্রদের অবস্থা কাহিল

আমিনা বিলকিস ময়না, সাতক্ষীরা: পৌষের হিমেল হাওয়ায় তীব্র শীতের প্রকোপে কাঁপছে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমের জনপদের ছিন্নমূলসহ সাধারণ মানুষ। শেষ পৌষে দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায় জেঁকে বসেছে তীব্র শীত।

সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলার মধ্যে উপকূলের উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনি সাগরের নিকটস্থ হওয়ায় দক্ষিণের হিমেল ঠান্ডায় কাঁপতে শুরু করেছে জেলার আশেপাশের  জনসাধারণ। জেলা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার মাজেদুল হক জানান,  গত কয়েক দিন ধরেই ভোরের কুয়াশা থাকায় দুপুরে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও শীত কাটছে না রোদের তাপেও। দুপুরে কড়া রোদ থাকলেও সে রোদের তাপমাত্রা কমে আসতে থাকে। দুপুর গড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হচ্ছে হিমেল হাওয়ার সাথে কনকনে শীত। বইতে থাকে হিমেল হাওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে কনকনে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। এর সাথে কুয়াশা। এর মধ্যে তাপমাত্রা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের খুব কাছে এসেছে সাতক্ষীরা। দু’দিন ধরে শ্যামনগর ও আশাশুনিতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের তাপমাত্রা ছিল ১১.২ ডিগ্রি  সেলসিয়াস।

তীব্র শীতে সাতক্ষীরার কাশিমপুরে এই বৃদ্ধাকে একটি কম্বলের আশায় বের হতে দেখা যায়।

পলাশপোলের আশরাফুল ইসলাম খোকন বলেন, শীতকে পুঁজি করে জেলা-উপজেলার হাটবাজারগুলোর রাস্তার ফুটপাতগুলোতে পুরনো কাপড় পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানগুলোতে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূলদের কাপড় কিনতে দেখা যাচ্ছে। তবে ক্রেতা কম থাকায় দোকানগুলোতে তেমন ভিড় দেখা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার পুরনো কাপড়ের দাম গতবারের চেয়ে একটু চড়া। আগের দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে এবার কাপড় কিনতে হচ্ছে। জেলা শহরের পাওয়ার হাউজের সামনে থেকে নিউমার্কেট এলাকা পর্যন্ত বসেছে পুরনো কাপড়ের অর্ধশতাধিক দোকান। পুরনো কাপড়ের সঙ্গে তারা নতুন শীতের কাপড়ও বিক্রি করছেন। এসব দোকানে কম-বেশি সারাদিনই ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখা গেছে, জেলার সর্বত্র।

শীতের এই প্রকোপ বৃদ্ধিতে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের সীমান্ত ও নদীসংলগ্ন এলাকার নিম্নআয়ের হতদরিদ্র হাজার হাজার মানুষ। হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। তবে শীতের ওই আগমনে এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি।

একে ট্রাভেলসের সাতক্ষীরার ম্যানেজার ফিরোজ হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে হাইওয়েতে চলাচলকারী নৈশকোচগুলো পড়েছে মহাবিপাকে। হেড লাইট জালিয়ে গাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটারের বেশি তুলতে পারছেন না চালকরা। চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।

এদিকে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোছাম্মাত চম্পা খাতুন জানান, শীতজনিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকায় শিশুরা ডায়ারিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শীতজনিত এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অনেকেই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.